রাজধানীর উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে তুরাগ বাসের মধ্যে শারীরিকভাবে লাঞ্চনার ঘটনায় আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য ১৬ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ৬ দফা দাবিও পেশ করেন তারা।
সোমবার বিকেলে উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের সামনে উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষে পারভেজ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো পেশ করেন।
দাবিগুলোর মধ্যে হল মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর ১২টা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গ্রেপ্তারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যাতে করে যেকোন অপরাধে তাদের দ্রুতই সনাক্ত করা যায়। ঘটনার সাথে জড়িত কোনো মালিক, ড্রাইভার, হেলপার, কর্মকর্তা-কর্মসূচি যেন পরিবহন ও পরিবহন সম্পর্কিত কোনো কাজে যুক্ত না থাকতে পারে সেদিকে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
পরবর্তীতে যেন এই রকম ন্যাক্কারজনক ঘটনা না ঘটে সে নিশ্চয়তা তাদের সাথে মালিক পক্ষকে বসে লিখিত অঙ্গিকার নামার মাধ্যমে নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে এবং পরবর্তীতে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে থাকে তার দায়ভার মালিকপক্ষকে নিতে হবে।
বিআরটিএর কাছে তাদের দাবি, ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির লাইসেন্স, ফিটনেসবিহীন কোনো গাড়ি যেন রাস্তায় চলাচল করতে না পারে তা সুচিশ্চিত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ১২টার মধ্যে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হলে, দুপুর ১টার পর থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি অব্যহত থাকবে। দুপুর ১টার মধ্যে তুরাগ বাসের কোনও ক্ষতি হলে বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের কোনও দায় থাকবে না।
প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরে উত্তরা ৬নং সেক্টরে উত্তরা ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে আসার জন্য উত্তর বাড্ডা থেকে তুরাগ পরিবহনের একটি বাসে উঠেন। এ সময় বাসে যাত্রী ছিল মাত্র ৭-৮ জন। এ সময় নাটকীয়ভাবে পরবর্তী স্টপেজগুলোতে বাস সামনে যাবে না বলে যাত্রীদেরকে নামাতে থাকে এবং নতুন কোনো যাত্রী উঠানো বন্ধ রাখে। এ সময় ওই ছাত্রীর সন্দেহ হলে তিনি বাস থেকে নামতে চেষ্টা করলে বাসের হেলপার দরজা বন্ধ করে দেয়। কনট্রাক্টর তার হাত ধরে টানাটানি শুরু করে। কনট্রাক্টর-হেলপারের সঙ্গে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে চলন্ত গাড়ি থেকে লাফিয়ে নেমে আসেন ওই ছাত্রী। তিনি অন্য একটি বাসে চড়ে ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে এসে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালে কর্তৃপক্ষ আশানুরূপ কোনো সমাধান দিতে পারেনি।
পরবর্তীতে সহপাঠী ছাত্রছাত্রীরা বিষয়টি জেনে আইনগত সহযোগিতার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে। কোনোভাবে কোনো সুরাহা না হওয়ায় রবিবার দুপুরে তারা ওই বাসটি আটক ও হেলপার কনট্রাক্টরকে আটকের দাবিতে রাস্তায় মানববন্ধন করে।
এ সময় বিক্ষুদ্ধ ছাত্ররা তুরাগ পরিবহনের প্রায় অর্ধশত বাস আটক করে বিচারের দাবি জানায়।