
এশিয়ান গেমস হকির বাছাইয়ে হংকংকে ৫-১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
রবিবার এশিয়ান গেমস হকির বাছাই পর্বের ম্যাচে বাংলাদেশ হংকংকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে।
এর আগে এশিয়ান গেমস হকির বাছাইয়ে ওমানের সুলতান কাবোস কমপ্লেক্সে রোববার ‘এ’ পুলে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে হংকংয়ের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে ১৯-১ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার আত্মবিশ্বাস হংকংয়ের সঙ্গী ছিল। থাইল্যান্ডকে ৫-০ গোলে হারিয়ে বাছাইপর্ব শুরু করেছিল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশকে অবশ্য বাড়তি অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে পরিসংখ্যানও। ২০১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত মুখোমুখি হওয়ার চার ম্যাচেই হংকংকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই চার ম্যাচে ১৮ গোল করে জিমিরা খেয়েছে পাঁচটি। কোচ হারুন তাই জয়ের প্রশ্নে আশাবাদী।
তিনি বলেছিলেন, প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান ছিল বলেই হংকং এত গোল করতে পেরেছে। তারপরও বলতে হবে, তাদের খেলায় উন্নতি হয়েছে। তবে সর্বশেষ ২০১৬ সালে হংকংকে তাদের মাঠেই আমরা ৪-২ গোলে হারিয়েছিলাম। আশা করি, কালও জেতাটা কঠিন হবে না।
থাইল্যান্ডকে হারানোর ম্যাচে সারোয়ার হোসেন, হাসান জুবায়ের নিলয়, মিলন হোসেন, রোমান সরকার ও মামুনুর রহমান চয়ন গোল করেছিলেন। তবে জয়ের ব্যবধান আরও বেশি না হওয়ায় হতাশ আশরাফুল ইসলাম। হংকং ম্যাচে সতীর্থ ফরোয়ার্ডরা আরও বেশি গোল পাবেন বলে আশা এই ডিফেন্ডারের।
তিনি বলেছিলেন, থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে গোল মিস হয়েছে কিন্তু ইতিবাচক ফল পেয়েছি। যে ভুলগুলো হয়েছে, সেগুলো খুঁজে বের করে আলাপ আলোচনা করেই আমরা হংকংয়ের বিপক্ষে খেলতে নামছি। আশা করি, আমরা ভাল পারফরম্যান্স উপহার দেব।
তিনি বলেছিলেন, থাইল্যান্ডের বিপক্ষে পেনাল্টি কর্নারে আরও গোল হওয়া উচিত ছিল। প্রথম ম্যাচ বলে হয়তো একটু সমস্যা হয়েছে। একটা বল পোস্টে লাগে, ওদের গোলরক্ষক দুটি ভালো সেভ করে। আশা করি, হংকংয়ের বিপক্ষে পিসির সুযোগগুলো আরও ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারব আমরা।
এর আগে ২০১৪ সালে ওমানকে শুধু হারিয়ে নয়, ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত করে এশিয়ান গেমস বাছাই হকির শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। এদিন পুরো দলটাই খেলল টুর্নামেন্টে নিজেদের সেরা ম্যাচ। দারুণভাবে নিজেকে মেলে ধরলেন অন্যতম সেরা তারকা পুস্কর ক্ষিসা, তাকে সঙ্গ দিলেন হাসান জুবায়ের, আগাগোড়া আত্মবিশ্বাসী পারফরম্যান্স নিয়ে অধিনায়ক মামুনুর রহমান তো ছিলেনই। এই জ্বলে ওঠা বাংলাদেশের সামনে ওমান কোন ছার! তারা দাঁড়াতেই পারল না। সে বছরের সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচনে অনুষ্ঠেয় এশিয়ান গেমসের মূল আসরে এশিয়ার সেরা ছয় দলের সঙ্গে (কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান, জাপান, মালয়েশিয়া ও চীন) বাংলাদেশ খেলবে তাই বাড়তি আত্মবিশ্বাস আর অন্তত বাছাইয়ে চ্যাম্পিয়নের তকমা ছিল তাদের।
২০১০ সালে সর্বশেষ বাছাই হকিতে পঞ্চম হয়েছিল বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের ৬টি দল বাছাই পেরোতে পারে বলে ২০১০ এশিয়ান গেমসে ঠিকই অংশ নেয় লাল-সবুজ। কিন্তু বাছাইয়ের ওই পারফরম্যান্স তখন একটা বিপর্যয় ছাড়া আর কিছু ছিল না। এবারের আসরেই যেমন র্যাং কিংয়ে আট দলের দ্বিতীয় হিসেবে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। ফাইনাল খেলাটা তাই প্রত্যাশিতই ছিল। আর শীর্ষে থাকা ওমান এশিয়া কাপে জিতেই যেহেতু এগিয়ে গেছে, তাদের হারানোটাও তাই ছিল কাম্য। এ টুর্নামেন্টের গত ৯ দিনে কী করে যেন সব কিছুই হয়েছিল এই চিত্রনাট্য মেনে।