
চরম বিপদে পড়ে যাওয়া দলকে উত্তরণের চেষ্টা করেছেন মুশফিকুর রহিম কিন্ত তারপরও জিততে পারল না বাংলাদেশ। ১৭৭ রান তাড়া করতে গিয়ে ১৫৯ রানে থেমে যায় টাইগাররা। ১৭ রানে হেরে যায় তারা। মুশফিকুর রহিম খেলেন ৫৫ বলে ৭২ বানের অতিমানবীয় এক ইনিংস।
বুধবার সন্ধ্যায় কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ত্রিদেশীয় খেলায় টসে জিতে ভারতকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শেখর ধাওয়ান।
এদিকে মুশফিককে সঙ্গ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন দলের বাকি ব্যাটসম্যানরা। আর তাতেই হারে বাংলাদেশ। ভারত কেটে নেয় ফাইনালের টিকিট। শেষ দুই ওভারে ৩৩ রানের দরকার ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু শারদুল ঠাকুরের করা ১৯তম ওভারেই পিছিয়ে যায় টাইগাররা। ওই ওভারে মাত্র ৪ নিতে পারে বাংলাদেশ। মূলত বাংলাদেশের পরাজয় গাঁথা লেখা হয়ে যায় ঠাকুরের ওই ওভারেই। কঠিন চাপে থাকা বাংলাদেশ এরপর শেষ ওভারে মিরাজের উইকেট হারিয়ে করতে পারে ১০ রান। ফলে বৃথা যায় মুশফিকুর রহীমের লড়াই।
এর আগে ৬১ রানে সেরা ৪ ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে যাওয়া দলকে উত্তরণের চেষ্টা করছেন মুশফিকুর রহিম। তার দিকেই তাকিয়ে ছিল দেশের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ।
লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবালের উইকেট হারিয়ে বিপাকে বাংলাদেশ দল। কঠিন চাপের মুখে ফেলে দিয়ে ফিরে গেছেন সেরা চার ব্যাটসম্যান। দলকে উত্তরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মুশফিকু রহিম ও সাব্বির রহমান।
ভারতের বিপক্ষে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ১৭৭ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই সাজঘরে ফিরেছেন লিটন কুমার ও সৌম্য সরকার। ৩.৪ ওভারে স্কোর বোর্ডে ৩৫ রান জমা করেই ফিরেন লিটন-সৌম্য। আগের ম্যাচে দলকে দারুণ শুরু এনে দেয়া লিটন এদিন ফিরেন মাত্র ৭ রানে।
মাত্র ১২ রানে লিটনের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলটি ছন্দে ফেরার আগেই ফের বিপদে পড়ে যায়। দলকে চাপের মুখে ফেলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল। দেশসেরা ওপেনার তামিম ১৯ বলে ২৭ রান করলেও ৩ বলে ১ রান করে আউট সৌম্য। মাত্র ২১ রানের ব্যবধানে ফেরেন দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। প্যাভেলিয়নে ফেরার আগে ৮ বলে ১১ রান করেন রিয়াদ।
উদ্বোধনীতে শেখর ধাওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে ৭০ রানর করার পর দ্বিতীয় উইকেটে সুরেশ রায়নাকে নিয়ে ফের ৯.২ ওভারে ১০২ রানের জুটি গড়েন ভারতীয় অধিনায়ক। আগের ম্যাচের তুলনায় ভারতের বিপক্ষে সহজ টার্গেট পেল টাইগাররা। শ্রীলংকার বিপক্ষে ২১৪ রান তাড়া করে জয় পাওয়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের নেতৃত্বাধীন দলটির জন্য বলতে গেলে সহজ টার্গেট দিল রোহিত শর্মার ভারত।
পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪৯ রান তুলে নেয় ভারত। অনেক চেষ্টা করেও ভারতের উদ্বোধনী জুটি ভাঙতে পারছিলেন না টাইগাররা। ক্যাচ তুলে দিয়েই নতুন জীবন পান ধাওয়ান। ভয়ঙ্করহয়ে ওঠা ভারতীয় উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন পেস বোলার রুবেল হোসেন। রুবেলের বলে উইকেট উড়ে যায় শেখ ধাওয়ানের। তারআগে ২৭ বলে ৩৫ রান করে ফিরেনধাওয়ান।
সাজঘরে ফেরার আগে রোহিত শর্মার সঙ্গে উদ্বোধনীতে ৯.৫ ওভারে ৭০ রানের জুটি গড়েন শেখর ধাওয়ান। অবশ্য ২২ রানেই ফিরে যাওয়ার কথা ছিলো ধাওয়ানের। সপ্তম ওভারে নাজমুলইসলাম অপুর বলে বাউন্ডারিতে ক্যাচতুলে দেন ভারতীয় এই ওপেনার।অনেক চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত ক্যাচটি লুফে নিতে পারেননি লিটন কুমার দাস। নিজেকে হাওয়ায় ভাসিয়েও ক্যাচটি তালুবন্দি করতে না পেরে হতাশাইপ্রকাশ করেছেন জাতীয় দলের এ ওপেনার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত: ২০ ওভারে ১৭৬/৩ (রোহিত ৮৯, রায়না ৪৭, ধাওয়ান ৩৫)।
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫৯/৬ (মুশফিক ৭২)।
বাংলাদেশ একাদশ: মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, আবু হায়দার রনি, মুস্তাফিজুর রহমান ও নাজমুল ইসলাম অপু।
ভারত দল: শিখর ধাওয়ান, লোকেশ রাহুল, সুরেশ রায়না, রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), মনিশ পান্ডে, দিনেশ কার্তিক, ওয়াশিংটন সুন্দর, বিজয় শঙ্কর, শারদুল ঠাকুর, মোহাম্মদ সিরাজ ও যুজবেন্দ্র চাহাল।