নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশ সহজে হারিয়েছে ভারত। তাও ৬ উইকেটে জয়। প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ ১৩৯ রান তোলে। ১৪০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অনায়াসে তা পেরিয়ে যায়।
নিদাহাস ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হারের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো বাংলাদেশকে। বোলারদের ভালো নৈপুণ্যের পর শিখর ধাওয়ানের অর্ধশতকে ভর করে ভারত পেয়েছে ৬ উইকেটের সহজ জয়। ১৪০ রানের জয়ের লক্ষ্যটা ভারত পেরিয়ে গেছে আট বল হাতে রেখেই।
ভারতের বিপক্ষে নিদাহাস ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শুরুতে ব্যাটিং করে স্কোরবোর্ডে বড় সংগ্রহ জমা করতে পারেনি বাংলাদেশ। ভারতকে দিয়েছে ১৪০ রানের টার্গেট। সেই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ঝড়োগতিতে করলেও চতুর্থ ওভারে রোহিত শর্মার উইকেট হারিয়েছিল ভারত। বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্যটি এনে দিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। এক ওভারের বিরতিতে ঋষভ পাণ্ডের উইকেট হারিয়েছে ভারত। এবার তাঁকে বোল্ড করে সাজঘরে পাঠিয়েছেন রুবেল হোসেন। তবে আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ান খেলেছেন ৫৫ রানের ইনিংস। শেষপর্যায়ে সুরেশ রায়নার ২৮ ও মনিশ পান্ডের অপরাজিত ২৭ রানের ইনিংসে ভর করে ৬ উইকেটের সহজ জয় তুলে নিয়েছে ভারত।
বাংলাদেশের পক্ষে দুটি উইকেট নিয়েছেন রুবেল হোসেন। একটি করে উইকেট গেছে মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের ঝুলিতে।
এর আগে শুরুতে দলে ছিলেন না। নিয়মিত অধিনায়কের ইনজুরি সেরে না ওঠায় সুযোগ হলো দলে। সেই লিটন কুমার দাসই বৃহস্পতিবার ভারতের বিপক্ষে বলার মতো যা রান করলেন।
আর দীর্ঘদিন ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া সাব্বির রহমানও ছোট্ট একটি ইনিংস। আর কোন ব্যাটসম্যান দায়িত্ব নিতে পারেননি। জুটিও হয়নি উল্লেখ করার মতো। পঞ্চম উইকেটে লিটন-সাব্বিরের ৩৫ রানই সর্বোচ্চ। ফলে লড়াইয়ের পুঁজি পেলো না টাইগাররা। নিদাহাস ট্রফিতে নিজেরদের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৮ উইকেটে ১৩৯ রানের সাদামাটা সংগ্রহ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের।
নিদহাস ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামবে টাইগাররা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টসে জিতে বাংলাদেশ দলকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ভারত। কলম্বোর প্রোমাদাসা স্টেডিয়ামেএম্যাচটি শুরু হবে।
ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু করতে চায় টাইগাররা। অন্যদিকে সিরিজের প্রথম খেলায় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরে যাওয়া ভারত জয়ে ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে খেলবে। জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামবে দু’দল।
বাংলাদেশের প্রথম সারির তিন ব্যাটসম্যানই দিয়েছিলেন বড় ইনিংস খেলার ইঙ্গিত। কিন্তু সৌম্য সরকার, তামিম ইকবাল বা মুশফিকুর রহিমের কেউই শেষপর্যন্ত খুব বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি উইকেটে। মাত্র ১ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও।
প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফিরতে পারতেন সৌম্য সরকার। কিন্তু ভাগ্যদেবীর আশীর্বাদে জীবন পেয়ে যান এই বাঁহাতি ওপেনার। থার্ড ম্যানে সহজ ক্যাচ ফেলে দেন ওয়াশিংটন সুন্দর। সেই সময় সৌম্য ছিলেন মাত্র দুই রানে। এরপর একটি চার ও ছয় মেরে বড় কিছুর ইঙ্গিতই দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষপর্যন্ত ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। তৃতীয় ওভারে থেমে গেছেন ১৪ রানে। ১৫ রান করে সাজঘরের পথে হেঁটেছেন আরেক ওপেনার তামিম ইকবালও। নবম ওভারে মুশফিকুর রহিম বিজয় শঙ্করের শিকার হয়ে ফিরে গেছেন ১৮ রান করে। প্রথম তিনজনের মতো দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। সেই শঙ্করেরই শিকার হয়ে ফিরে গেছেন মাত্র ১ রান করে।
নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশ নেমেছে নিজেদের প্রথম ম্যাচে। কলম্বোর প্রেমাদাসা মাঠে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের লড়াইয়ে তারা মুখোমুখি হয়েছে ভারতের। ম্যাচের টস ভাগ্যটা হেসেছিল রোহিত শর্মার দিকেই। আর জিতেই ফিল্ডিংটা বেছে নিতে ভুল করেননি ভারতীয় অধিনায়ক। টসে হেরে তাই ব্যাটিংয়ে নামতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
সর্বশেষ সিরিজের বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন অলরাউন্ডার আরিফুল হক। প্রায় পাঁচ মাস পর মাঠে নামছেন লিটন দাস। আবারও সুযোগ মিলেছে মারকুটে ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমানের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ছিলেন না স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। নিদাহাস ট্রফির প্রথম ম্যাচেই অবশ্য ফিরেছেন সাকিব আল হাসান বদলি এই অলরাউন্ডার।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বাজে বোলিংয়ের কারণে তাসকিন আহমেদ বাদ পড়েছিলেন ঘরের মাঠের সিরিজে। ত্রিদেশীয় সিরিজের সঙ্গে ডানহাতি এই পেসার ছিলেন না টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজেও। নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের পছন্দেই নিদাহাস ট্রফির দলে রাখা হয়েছিল এই তরুণ গতিতারকাকে। প্রস্তুতি ম্যাচের দুর্দান্ত বোলিং আবারও তাসকিনকে সুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশ দলে।
তাসকিনের মতো লিটন দাসও গত অক্টোবরেই নেমেছিলেন শেষ টি-টোয়েন্টির জার্সিতে। আর ডানহাতি লিটনের সুযোগ হয়েছিল আঙুলের চোটে শেষ মুহূর্তে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের দল থেকে ছিটকে যাওয়ায়। প্রস্তুতি ম্যাচে মারকুটে ব্যাটিংয়ে ঠিকই টিম ম্যানেজমেন্টের নজরে পড়েছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।
অন্যদিকে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই লড়াইয়ে নামছে ভারত। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী দিনেই স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরেছে ভারত।
বাংলাদেশ দলের মুখোমুখি হওয়ার আগে ভারত একটু এগিয়েই থাকছে মানসিক ভাবে। দুই দল একে অপরের বিপক্ষে মোট মাঠে নেমেছে পাঁচবার। পাঁচ টি-টোয়েন্টির লড়াইয়ে পাঁচটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। আর দুই দলের মুখোমুখি হওয়া শেষ ম্যাচটায় তো ব্যাঙ্গালুরুতে শেষ বলের নাটকীয়তায় এক রানে হেরেছিল লাল-সবুজের দল।
বাংলাদেশ একাদশ : মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও নাজমুল ইসলাম অপু।