
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে ১৯৭১ এর আদলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভা অনুষ্ঠিত হবে আজ বুধবার। দুপুর ২টায় শুরু হতে যাওয়া জনসভায় যোগ দিতে এরই মধ্যে নেতাকর্মীরা রওয়ানা দিয়েছেন।
বুধবার (০৭ মার্চ) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেলা ২টায় জনসভা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। এতে প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সকাল ১১টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য কয়েকশ মানুষের দীর্ঘ লাইন। ওরা সবাই আজ ৭ মার্চ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত মহাসমাবেশে যোগ দিতে সাত সকালে ছুটে এসেছেন। সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, শাহবাগ, নীলক্ষেত, দোয়েল চত্বরসহ বিভিন্ন পথে জনস্রোত নেমেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানমুখে। শুরু হয়েছে তীব্র যানজট।
প্রায় প্রতিটি নেতাকর্মীর হাতে শোভা পাচ্ছে দলটির প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়ের ছবি ও স্লোগান সম্বলিত নানান রংয়ের ব্যানার, ফেস্টুন, প্লেকার্ড। আগামী নির্বাচনের আগে এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মাঠে নামার সুযোগ পেয়ে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি ও জনসমর্থন প্রকাশ করতে চাইছে আওয়ামী লীগ ।
৪৭ বছর পর সেই একই ময়দানে আবারও সেদিনের মতো জনসমুদ্র তৈরির চেষ্টায় আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ ৭ মার্চ প্রতিবার যথাযোগ্য সম্মানে পালন করলেও এবারের আয়োজনে রয়েছে ভিন্ন আমেজ। কারণ ইউনেস্কো ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় স্থান দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বাংলা রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা পায়: প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা: ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতিসত্তা প্রকাশের পথ দেখিয়েছিল, ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বাংলা রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা পায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে ভাষার জন্য রক্ত দেওয়া হয়েছিল, সে ভাষা আমরা শিখবো না কেন? চর্চা করব না কেনো?। এটা একান্তভাবে আমরা মনে করি, এ ভাষার চর্চা অপরিহার্য। মাতৃভাষা বলাটা ইংরেজিভাবে শুরু হয়ে গেছে কেন, তা আমি জানি না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আসার পরই বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পায়। ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন জাতির পিতা। তিনি বলেন, ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ আবারও উন্নয়নে কাজ শুরু করে। এখন মুক্তিযুদ্ধের কথা মানুষ বলতে পারে।
আজ শনিবার বিকালে কৃষিবিদ ইস্টিটিউশন মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি অর্জনের পেছনে এদেশর মানুষের ত্যাগ রয়েছে। ক্ষমতাকে একবারে তৃণমূলে পৌঁছে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতির পিতার অনুরোধে মিত্রশক্তিকে ফেরৎ নিয়ে যায় ইন্দিরা গান্দী। স্বাধীনতার সুফল বাংলাশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ শুরু করেছিলেন জাতির পিতা।
তিনি বলেন, যুদ্ধপারধীদের বিচার বন্ধ করে তাদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেওয়া হয়ে। জাতির পিতার হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়। তিনি আরও বলেন, ৭৫’ এবং ১৫’ আগস্টের পর পাকিস্তানি প্রদেশ বানানো চেষ্টা করা হয়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অধিকতর উন্নয়ন এবং বিশ্বে জাতির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে বাংলা ভাষার যথাযথ চর্চা, ব্যবহার এবং সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছি এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছি। এটি আমাদের জন্য বিরাট গৌরবের বিষয়। তাই এ ভাষার চর্চা ভুলে যাওয়া উচিত হবে না।
তিনি আরো বলেন, বাঙালি হিসেবে আমরা আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও অন্যান্য গৌরব সমুন্নত রাখবো এবং এ ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করবো।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০১৮ উপলক্ষে বুধবার বিকেলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের (আইএমএলআই) ৪দিনের কর্মসূচি উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। ইনস্টিটিউটের নিজস্ব মিলনায়তনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। খবর বাসসের।
শিক্ষামন্ত্রী নুুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী এবং ঢাকায় ইউনেস্কোর প্রধান প্রতিনিধি বি কালদুনও বক্তৃতা করেন।
এতে ‘লিঙ্গুইস্টিক ডাইভারসিটি এন্ড মাল্টিলিঙ্গুয়ালিজম কাউন্ট ফর সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন শ্রীলংকার ন্যাশনাল কো-এক্সিজটেন্স ডায়ালগ এন্ড অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজের সচিব ডব্লিউএমপিজি বিক্রমসিংগে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের সচিব সোহরাব হোসেন এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। ধন্যবাদ জানান আইএমএলআই’র মহাপরিচালক ড. জিনাত ইমতিয়াজ আলী।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, লেখক, কবি, সাংবাদিক, একুশে পদকপ্রাপ্ত এবং পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।