
শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রেখে বাংলাদেশে নির্বাচন দেখতে চায় সুইজারল্যান্ড, গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিঘ্নিত হয় এমন কাজ কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আঁলা বেরসে।
বুধবার সকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সফর নিয়ে কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট এ কথা বলেন।
সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আঁলা বেরসে বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকার পাশাপাশি গণতন্ত্র ও নির্বাচনের মাধ্যমে যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকে, সেটােই প্রত্যাশা করে সুইজারল্যান্ড।
চার দিনের সফর শেষে বাংলাদেশ নিয়ে প্রত্যাশার কথা বলতে গিয়ে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন আঁলা বেরসে।
আঁলা বেরসে জানান, দুই দেশের সম্পর্ককে আরও জোরদার করার পাশাপাশি রোহিঙ্গা–ঢলের মতো মানবিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করতে তিনি এই সফরে এসেছেন।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে যথেষ্ট ভূমিকা রাখার পরও বাংলাদেশকে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। অথচ মিয়ানমারে এখনো জাতিসংঘসহ জরুরি মানবিক সংস্থার পাশাপাশি গণমাধ্যমের অবাধ যাতায়াত নিশ্চিত হয়নি। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কি মিয়ানমারের ওপর চাপ দেওয়া জরুরি নয়—এমনটা জানতে চাওয়া হয় আঁলা বেরসের কাছে।
জবাবে আঁলা বেরসে বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের দুটি দিক রয়েছে। প্রথম ধাপটি হচ্ছে জরুরি মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ যা করেছে, তা ভূয়সী প্রশংসার দাবি করে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তার অংশ হিসেবে এ বছর আমরা ১২ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ দিচ্ছি। দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান। আমরা কফি আনান কমিশনের সুপারিশের বাস্তবায়ন চাই। আর দুই দেশের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে, তা কীভাবে মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে, সেটি নিশ্চিত করা জরুরি। আর এটার জন্য মাঠপর্যায়ে কী অবস্থা রয়েছে, সেটি দেখার স্বার্থে সেখানে যাওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করা উচিত।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সফর শেষে আজ দুপুরে ঢাকা ছেড়ে গেছেন সুইস প্রেসিডেন্ট আঁলা বেরসে।
এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে যেকোন ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে দেশজুড়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে। ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, র্যা পিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ, এডিশনাল আইজি সোহেলী ফেরদৌস আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সেই সাথে সারা দেশে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতয়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে বগুড়ায় ৩ প্লাটুন, কুমিল্লায় ৩ প্লাটুন, নারায়নগঞ্জে ৩ প্লাটুন, নোয়াখালীতে ১ প্লাটুন, লক্ষীপুরে ১ প্লাটুন, চাঁদপুরে ১ প্লাটুন করে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। একই ভাবে সারা দেশের সাথে রায়কে ঘিরে সহিংসতার আশঙ্কায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তার, গোয়েন্দা তৎপরতা, নজরদারি ও তল্লাশি জোরদার করে। নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে সমগ্র রাজধানী।