
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগনের প্রতিবাদের মুখে সরকারকে বিদায় নিতে হবে। এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানান।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে তৃতীয় দফায় আজ শনিবার গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন হয়। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নেতাকর্মীদের প্রতি এই আহ্বান জানান। এসময় তিনি বিএনপি’র নেতাকর্মীদের সব ধরনের উষ্কানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সরকারি দল উস্কানি দিবে যাতে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হয়, তারা রাজনৈতিক সুবিধা নিতে পারে। আমরা তাদের সেই সুযোগ দিব না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আমরা আদায় করব।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের যে উস্কানি, নীলনকশা তা ব্যর্থ করে দিয়ে জনগণের বিজয়কে ছিনিয়ে আনতে হবে। মনে রাখতে হবে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সংকটময় মুহূর্তে আমরা উপস্থিত হয়েছি।’
‘দেশের স্বাধীনতা থাকবে কি না, আমাদের স্বাধীন অস্তিত্ব বাচঁবে কি না সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আর সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন খালেদা জিয়া। তাই বলব, আর বসে না থেকে সবাই ঘর থেকে বেরিয়ে আসুন, সোচ্চার হন, প্রতিবাদ করুন বন্ধুগণ,’ যোগ করে তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য যে কয়জন নেতা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। তিনি জনগণের রায়ে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, যিনি কখনও কোনও নির্বাচনে পরাজিত হননি। আজকে সেই খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে। অগণতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকার বল প্রয়োগ করে বেআইনিভাবে একটি মিথ্যা, সাজানো মামলার মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়াকে নির্জন কারাগারে আটক করে রেখেছে। সেই কারাগার থেকে তাকে মুক্ত করবার জন্য, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আন্দোলন করছি।’
তিনি বলেন, ‘এই অগণতান্ত্রিক সরকার সম্পন্নভাবে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। জনগণের কোনও সমর্থন তাদের প্রতি নেই। তাই তারা তাদের পুরানো একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য ভিন্নরূপে খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করেছে। হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। আমাদের দলের স্থায়ী কমিটি থেকে তৃণমূল পর্যায়ে এমন কোনও জেলা নেই যেখানে গ্রেফতার করা হয়নি। প্রতিদিন নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু বর্তমান অবৈধ সরকার মিথ্যা, সাজানো মামলায় তাকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক করে রেখেছে। কারাগার থেকে তাকে মুক্ত করবার জন্য, দেশের হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র মুক্ত করবার জন্য, মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। সেই আন্দোলন আজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। তার অংশ হিসেবে আজকের এই গণস্বাক্ষর কর্মসূচি, এ কর্মসূচি চলতে থাকবে।
গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা অনির্বাচিত, অনৈক সরকারের পদত্যাগ ও খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি। খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়ে দেশের মানুষ ও গণতন্ত্রকে কারাগারে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়ার মুক্তি দেশের সাধারণ মানুষ ও গণতন্ত্রের মুক্তি।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, যার মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে এবং দেশের মানুষ আবারও শান্তিতে থাকতে পারবে।
দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজেই বলেছেন, বিএনপির অক্ষমতার কারণে তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি। আমি তাকে বলতে চাই- বিএনপি সন্ত্রাস নয়, শান্তিতে বিশ্বাস করে। আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে দুর্বলতা ভাবলে ভুল করবেন। আপনারা আমাদের উস্কানি দিচ্ছেন, যাতে সেই সুযোগে নিজেরা অপকর্ম, নাশকতা করে বিএনপির ওপর দোষ চাপাতে পারেন।