
গ্রেপ্তার আতঙ্ক ও ধরপাকড় আর বাসায় বাসায় তল্লাশির মধ্যেই বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা শুরু হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়া সভায় উপস্থিত রয়েছেন। অনেকে গ্রেপ্তার এড়াতে বিমানে করে ঢাকায় এসেছেন।
শনিবার সকাল ১১ টার দিকে রাজধানীর লা মেরিডিয়েন হোটেলের ১৪ তলার গ্র্যান্ড বল রুমে এই সভা শুরু হয়েছে। সারা দেশের বিএনপির নেতারা যোগ দিয়েছেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির এই বহুল আলোচিত সভায়। এই সভায় সভাপতিত্ব করছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের আগে আজকের এই সভা থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে বিএনপির চেয়ারপারসন জরুরিভাবে দলের সর্বোচ্চ ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে আগামী দিনের জন্য কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়নি।
এব্যাপারে দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে আভাস পাওয়া গেছে, তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের মতামত নিয়েই পরবর্তী সময়ের কর্মসূচি দিতে চান বিএনপির চেয়ারপারসন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভার আমন্ত্রিত সদস্যদের পরিচয়পত্র গত বৃহস্পতিবার থেকেই বিতরণ করা হচ্ছে। সভায় কেন্দ্রীয়, জেলা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ প্রায় সাতশ নেতাকর্মীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, নির্বাহী কমিটির ৫০২ জন সদস্যের মধ্যে এরই মধ্যে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। কয়েকজন অসুস্থ আছেন। বাকিরাও এসে পড়বেন। বাধাবিঘ্ন অতিক্রম করে তারা সভায় যোগ দিতে এসেছেন।
সভায় আলোচনার বিষয় সম্পর্কে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘দেখুন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিনিয়ত দুর্বল হচ্ছে। গণতন্ত্র দুর্বল হওয়া মানে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অরক্ষিত হওয়া। সরকার গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দিচ্ছে, গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনা-মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিচ্ছে। একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা কোনো কল্যাণকর কাজ নয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের রাস্তায় দাঁড়াতে দিচ্ছে না। কিন্তু সরকার দলের লোকজন রাস্তা আটকে প্রতিদিন সভা করছে। এটার আমরা পরিবর্তন চাই। আমাদের অনেক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সবচেয়ে আশঙ্কার কথা, তাদের নিয়ে কোথায় রাখা হচ্ছে সেটাও জানা যাচ্ছে না। এটাই পরিবর্তন হওয়া জরুরি। সব দিক বিবেচনায় নিয়েই আজকেই এই সভা। সেই অনুযায়ী দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বক্তব্য দেবেন, দিকনির্দেশনা দেবেন।’
শনিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ৮টার পর থেকেই নেতারা হোটেলে আসতে শুরু করেন। এর মধ্যে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের নেতারা রয়েছেন। হোটেল চত্বরে তাদের অভ্যর্থনা জানানো হচ্ছে। ঢাকার বাইরে থেকে আসা অনেককে নাম নিবন্ধন করে পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে দেখা গেছে।