
‘চিঠি দিও প্রতিদিন’, ‘ঐ রাত ডাকে ঐ চাঁদ ডাকে’ খ্যাত বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী শাম্মী আকতারের ইন্তেকাল করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ ক্যানসারে ভুগছিলেন। যদিও এর আগে জানানো হয়েছিল দীর্ঘ এক বছর ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে জয়ী হলেন এই বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী।
মঙ্গলবার বিকালে শিল্পী শাম্মী আক্তারের স্বামী আকরামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সম্প্রতি তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।
এর আগে বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ জিৎ রায় এবং সহ সভাপতি ‘একুশে পদক’ প্রাপ্ত গণসংগীত শিল্পী মাহমুদ সেলিম বলেন, গুণী এই শিল্পীর শারীরিক অবস্থা সঙ্গিন। দ্রুত তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া জরুরী। তার পরিবারও চিকিৎসার ব্যয়ভার নির্বাহ করতে গিয়ে প্রায় নিঃস্ব হয়ে গেছেন। একমাত্র ছেলে আর অবসরপ্রাপ্ত রেডিও কর্মকর্তা স্বামীর চেষ্টাতেই চলছে তার চিকিৎসা।
যদিও এর আগে জানানো হয়েছিল মরণব্যাধি ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করে মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে এসেছেন বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী শাম্মী আকতার। দীর্ঘ এক বছর ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে জয়ী হলেন এই বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী।
প্রসঙ্গত গত বছরের জানুয়ারিতে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর ঢাকার ধানমন্ডির আহমেদ মেডিকেল সেন্টারে ডা. মাহফুজের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার পরে তাকে গত এক বছর ধরে নিয়মিত ক্যামো নিতে হচ্ছিল। গত বছরের ৭ জানুয়ারি তিনি সর্বশেষ ক্যামোটি নিয়েছেন। এখন চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে পুরোপুরি ক্যান্সারমুক্ত ঘোষণা করেছেন।
এ প্রসঙ্গে শাম্মী আকতার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমি ক্যান্সার থেকে পরিপূর্ণভাবে আরোগ্য লাভ করেছি-এ কথা চিকিৎসকের কাছ থেকে জানার পরে কী যে ভালো লাগছে তা বলে বোঝাতে পারব না। সবার আশীর্বাদে আমি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই জটিল এ রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করেছি, এ জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
অসুস্থতার সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা আমার নিয়মিত খোঁজখবর নিয়েছেন। যা আমাকে মানুষিক শক্তি জুগিয়েছে। এটাই আমার জীবনের বড়প্রাপ্তি।
দীর্ঘদিন ক্যান্সারে আক্রান্ত থাকার কারণে বর্তমানে তিনি শারীরিকভাবে বেশ দুর্বল রয়েছেন। এ দুর্বলতা কাটিয়ে উঠলে শিগগিরই তিনি নিয়মিত গানে ফিরবেন বলে শাম্মী আকতার জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, শাম্মী আকতার আধুনিক এবং দেশের গানের পাশাপাশি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েও প্রশংসিত হয়েছেন। প্রায় চার বছর আগে সর্বশেষ তিনি জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না’ ছবিতে প্লেব্যাক করেছিলেন। এ গানের জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। অসংখ্য জনপ্রিয় গানের এ শিল্পী জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি সঙ্গীত সাধনা চালিয়ে যেতে চান।