
শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতে জড়িত সবার বিচার সময়মতো হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। শনিবার সিলেটে ‘বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তা কনফারেন্স এবং বিনিয়োগ শিক্ষা মেলা ২০১৮’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
সাত বছরে পুঁজিবাজারের ভিত্তি মজবুত হয়েছে দাবি করে মুহিত বলেন, ‘শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের ব্যাপারে প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনেকগুলো মামলাও চলমান। তবে তাদের শাস্তি প্রদান সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সময়মতো সবার বিচার সম্পন্ন হবে।’
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাগ্যের উপর ভরসা না করার পরার্মশ দেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এখন পুঁজি বাজার বিকাশের সময়। আইপিও বৃদ্ধির মাধ্যমে পুঁজিবাজার ব্যাপক প্রসার লাভ করবে। এখানে পড়াশোনা ও গবেষণা করে বিনিয়োগ করতে হবে। তবে শিল্প ও বিনিয়োগ খাতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ও আর্থিক সক্ষমতা বাড়বে।’
যারা পুঁজিবাজারকে ফটকা বাজার বলে মনে করে তারা পুঁজিবাজারের শত্রু বলে মন্তব্য করেন মুহিত।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান একে আবুল মোমেন, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার মো. হেলাল উদ্দিন নিজামী, মো. আমজাদ হোসেন, স্বপন কুমার বালা ও খন্দকার কামালুজ্জামান প্রমুখ।
এর আগে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারী সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন,বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের কারণে আগামী বাজেটে তেমন কোনো চাপ পড়বে না বলে জানিয়েছেন । রোহিঙ্গারা দেশের অর্থনীতিতে যে ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল ততটা হচ্ছে না।
এর আগে এডিবির এশিয়া অঞ্চল বিষয়ক মহাপরিচালক হুন কিনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে রোহিঙ্গা বিষয়েও কথা হয়।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বিশাল এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী জাতীয় বাজেটে কোনো চাপ ফেলবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘তেমন একটা প্রভাব ফেলছে না। শুরুতে ভেবেছিলাম তারা আমাদের বাজেট তছনছ করে দেবে। কিন্তু এখন বলা যায় তেমন সমস্যা হচ্ছে না।’
কারণ হিসেবে মন্ত্রী বলেন, ‘তাদের খাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিদেশি রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলো সহায়তা করছে। তাই আমাদের খুব বেশি চাপ পোহাতে হচ্ছে না।’
মুহিত বলেন, ‘তবে সেখানে আমাদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় কাজ করছে। তাদের কিছু চাহিদার বিষয়ে তারা জানাচ্ছে। আমরা সেগুলোর ব্যবস্থা করছি। তবে এর পরিমাণ খুব বেশি নয়।’
মন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গাদের জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এডিবির কাছ থেকে অর্থ পেতে প্রকল্প তৈরি করছে সরকার। এ লক্ষ্যে কী পরিমাণ অর্থ লাগবে সেটিও এস্টিমেট করা হচ্ছে। অর্থসচিবকে এ বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি ১০/১৫ দিনের মধ্যে হিসাব দেবেন।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে এডিবির দক্ষিণ এশীয় মহাপরিচালকের বৈঠকে বাংলাদেশকে আগামী পাঁচ বছরে আট বিলিয়ন ঋণ সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তার বিষয়টিও উঠে আসে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ চাইলে এডিবি রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা তহবিল দিতে প্রস্তুত আছে বলে জানান হুন কিম। পরে তিনি সাংবাদিকদেরও এ বিষয়ে অবহিত করেন।