
জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইংরেজি বিভাগের জোবায়ের আহমেদ হত্যা মামলায় হাইকোর্ট পাঁচজনের ফাঁসি দুইজনের যাবজ্জীবন ও চারজন খালাস।
বুধবার বিকালের দিকে বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্র খন্দকার আশিকুল ইসলাম আশিক, খান মো. রইছ ওরফে সোহান, জাহিদ হাসান, দর্শন বিভাগের মো. রাশেদুল ইসলাম রাজু এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মাহবুব আকরাম। এদের মধ্যে রাশেদুল ইসলাম রাজু ছাড়া বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত ইশতিয়াক মেহবুব অরূপ (পলাতক) ও নাজমুস সাকিব তপুর দণ্ড বহাল রয়েছে।
যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বাকি চারজন খালাস পেয়েছেন। তারা হলেন- প্রাণিবিদ্যা বিভাগের কামরুজ্জামান সোহাগ, পরিসংখ্যান বিভাগের মাজহারুল ইসলাম, শফিউল আলম সেতুও অভিনন্দন কুণ্ডু অভি। এদের মধ্যে শুধু অরূপ পলাতক রয়েছেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সারওয়ার কাজল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নির্মল কুমার দাস। আসামিপক্ষে ছিলেন আব্দুল মতিন খসুর, এসএম আবুল হোসেন, খায়রুল আলম, ফাহিমা রাব্বি ও রানা কাউসার। পলাতকদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন শফিকুল ইসলাম।
এর আগে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় শুরু হয়।
বেঞ্চের আরেক বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ছুটিতে থাকায় দিন ধার্য থাকলেও গতকাল এই রায় পড়া হয়নি। উভয় বিচারকের উপস্থিতিতে আজ পুনঃনির্ধারিত তারিখে রায় পড়া শুরু হয়।
গত ৯ জানুয়ারি জুবায়ের আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষ হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সারওয়ার কাজল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নির্মল কুমারদাস।
আসামিপক্ষে ছিলেন আব্দুল মতিন খসুর, এসএম আবুল হোসেন, খায়রুল আলম, ফাহিমা রাব্বি ও রানা কাউসার। পলাতকদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন শফিকুল ইসলাম।
জুবায়ের হত্যায় ছাত্রলীগের ৫ নেতাকর্মীর ফাঁসি
(০৮ ফেব্রুয়ারি,২০১৫) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের হত্যাকাণ্ডের আলোচিত মামলার রায়ে ৫ জনকে ফাঁসি ও ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।
মামলার ১৩ আসামির মধ্যে বাকি ২ জন বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
দণ্ডিতরা সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। তিন বছর আগে সংগঠনের প্রতিদ্বন্দ্বী একটি পক্ষের হামলায় নিহত জুবায়েরও ছাত্রলীগ করতেন।
রবিবার জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবিএম নিজামুল হক এ রায় ঘোষণা করেন।
ফাঁসির আদেশপ্রাপ্তরা হলেন—খন্দকার আশিকুল ইসলাম আশিক, মো. রাশেদুল ইসলাম রাজু, খান মো. রইছ ওরফে সোহান, জাহিদ হাসান এবং মাহবুব আকরাম।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—ইশতিয়াক মেহবুব অরূপ, নাজমুস সাকিব তপু, মাজহারুল ইসলাম, কামরুজ্জামান সোহাগ, শফিউল আলম সেতু এবং অভিনন্দন কুণ্ডু অভি। তাদেরকে কারাদণ্ডের অতিরিক্ত ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন মো. নাজমুল হুসেইন প্লাবন ও মো. মাহমুদুল হাসান মাসুদ।
এর আগে রবিবার দুপুর ১২টা ৫০মিনিটে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক এ বি এম নিজামুল হক রায় পড়া শুরু করেন।
রায় ঘোষণার জন্য কারাগার থেকে আসামিদের মধ্যে সাত জনকে কাঠগড়ায় উঠানো হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য ৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য ছিল। ওইদিন হরতাল-অবরোধ থাকায় আসামিদের কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করতে না পারায় রায় ঘোষণার জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করে আদালত।
আলোচিত এ মামলায় ৭ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ ও ২৮ জানুয়ারি আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট তাসলিমা ইয়াছমিন দিপা ও আসামিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান ও অ্যাডভোকেট জামান উদ্দিন আহম্মেদ।
২৮ জানুয়ারি জামিনে থাকা সাত আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠান আদালত।
তারা হলেন- মো. নাজমুল হুসেইন প্লাবন, শফিউল আলম সেতু, অভিনন্দন কুণ্ডু অভি, মো. মাহমুদুল হাসান মাসুদ, নাজমুস সাকিব তপু, মাজহারুল ইসলাম ও কামরুজ্জামান সোহাগ।
এ মামলার পলাতক ৬ আসামি হলেন- খন্দকার আশিকুল ইসলাম, খান মোহাম্মদ রইস, রাশেদুল ইসলাম রাজু, ইসতিয়াক মেহবুব অরূপ, মাহবুব আকরাম, জাহিদ হাসান।
গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে মামলার ১৩ জন আসামির মধ্যে সাত জন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
গত বছর ২৭ নভেম্বর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলায় ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে মোট ২৭ জনের বিভিন্ন সময় ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যপ্রদান করেন।
তবে মামলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ও নিহত জুবায়েরের প্রেমিকা মুশাররাত মাহেরা নিটল সাক্ষী দেননি।
২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি বিকেলে জুবায়ের আহমেদকে প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কুপিয়ে জখম করেন। পরদিন ভোরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
জুবায়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে ঘটনার পর দিন আশুলিয়া থানায় ১৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।