হন্ডুরাসে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট হুয়ান আর্লান্দো হার্নান্দের বোনসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন।
শনিবার তাদের বহনকারী ইউরোকপ্টার এএস৩৫০ এখিরউইল হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয় বলে জানিয়েছে হন্ডুরাসের সামরিক বাহিনী।
নিহত ৫১ বছর বয়সী হিলদা হার্নান্দে তার ভাই হুয়ানের ঘনিষ্ঠ পরামর্শদাতা ছিলেন। প্রেসিডেন্ট হুয়ান ২৬ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক বিবাদে জড়িয়ে পড়েছেন এবং এখনো পর্যন্ত বিবাদ অমিমাংসিত অবস্থায়ই রয়ে গেছে। বোন হিলদা তার সরকারের সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন।
হিলদা ও তার সঙ্গীদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি রাজধানী তেগুতিগালপার তনকন্তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়ে উত্তর-পশ্চিমে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরের শহর কোমাইয়াগুয়ায় যাচ্ছিল। পরে রাজধানীর কাছে একটি পাহাড়ে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।
এক বিবৃতিতে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, হেলিকপ্টারটি নিখোঁজ হওয়ার পর তাদের খোঁজে দুটি পর্যবেক্ষণ গোয়েন্দা হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু ঝড়ো আবহাওয়ার কারণে গোয়েন্দা হেলিকপ্টার দুটি ফিরে আসতে বাধ্য হয়; পরে তাদের খোঁজে স্থলপথে আরেকটি দল পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে সশস্ত্র বাহিনী বলেছে, ‘হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেছে, কিন্তু কাউকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়নি।’
হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের কারণ তারা তদন্ত করে দেখবে বলেও জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি সূত্র রয়টার্সকে বলেছেন, ‘হেলিকপ্টারটিতে হিলদা হার্নান্দেসহ ছয়জন ছিলেন, তাদের সবাইকে মৃত পাওয়া গেছে।’
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ক্ষমতাসীন দলের প্রেসিডেন্ট রিনাল্ডো সানচেজ টুইটারে জানান, ‘ঈশ্বর তার প্রিয় পাত্রী হিল্ডা হার্নান্ডেজেককে তার কাছে নিয়ে গেছেন। হিল্ডা ন্যাশনাল পার্টির একজন অক্লান্ত পরিশ্রমী যোদ্ধা ছিলেন।’
এই দুর্ঘটনায় আরো যারা মারা গেছেন তারা হলেন- পাইলট লেফটেন্যান্ট ইভান ভাসকুয়েজ পোর্টিলো, কো-পাইলট সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট গার্সন ডিয়াজ নোলাস্কো, সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন প্যাট্রিসিয়া ভালাদারেস এবং মন্ত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা বিভাগের দুই কর্মী নাগুম লাগোস ও মার্কোস বানেগাস।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর থেকেই হন্ডুরাসে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। সরকারি ফলাফল অনুযায়ী, নির্বাচনে টেলিভিশন তারকা মধ্য-বামপন্থি প্রার্থী সালভাদর নাসরাল্লা ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট হুয়ান থেকে এক দশমিক ছয় শতাংশ ভোটে পিছিয়ে আছেন।
কিন্তু নির্বাচনের এই ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দেশটির প্রধান দুই বিরোধী দল ও কূটনীতিকদের বড় একটি অংশ।