
রাজশাহীতে রাব্বি নামের এক শিশুকে হত্যার অপরাধে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে আমৃত্য কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে মহানগরীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শিরিন কবিতা আখতার এ রায় দেন। এসময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অভিযুক্ত মোট ৭ আসামির মধ্যে রায়ে ৩ জনকে ফাঁসি, একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও অপর ৩ জনকে বেকসুর মুক্তি দেয়া হয়েছে। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৩ জন হলেন- আবুল কাশেমের ছেলে মাজেদুর রহমান সাগর (১৯), হযরত আলীর ছেলে নাজমুল হক (২০) ও আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রিপন সরকার লিটন (২০)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যা অনুমানিক সাড়ে ৬ টার দিকে মোহনপুর উপজেলার বেড়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ফজলে হোসেন রাব্বিকে (১০) অপহরণ করা হয়। ওই রাতেই রাব্বিকে হত্যা করে অপহরণকারীরা। এরপর ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে রাব্বির বাবা মামলার বাদী আলী হোসেনকে মোবাইল করে।
২৪ ডিসেম্বর রাব্বিকে মুক্তি দেয়ার কথা থাকলেও ওই দিন অপহরণকারীদের ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। আলী হোসেন প্রথম ২০ ডিসেম্বর মোহনপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি এবং ২৪ ডিসেম্বর এজাহার দায়ের করেন।
এর দুদিন পর ২৬ ডিসেম্বর শিশু রাব্বির লাশ উদ্ধার হয়। পুলিশ মোবাইল কলের সূত্র ধরে আসামিদের গ্রেফতার করে। এরপর আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে মামলা কাজ গতি পায়।
এর আগে চলতি বছরের ২৯ নভেম্বর গ্রেফতারকৃত ৭ আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে দুই দিনব্যাপী যুক্তিতর্ক শেষে বিচারক শিরীন কবিতা আখতার আসামিদের জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন এবং ১৯ ডিসেম্বর এই মামলার রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন। এই মামলায় বাদি পরে ১৮ জন এবং আসামি পক্ষের ২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
রাজশাহীতে দুই শিশুর বুদ্ধিমত্তায় তেলবাহী ট্রেনের রক্ষা!
রাজশাহীতে তেলবাহী একটি ট্রেনকে দুর্ঘটনার কবল থেকে রক্ষা করেছে দুই শিশু। তাদের নাম সিহাবুর রহমান (৬)ও টিটোন আলী (৭)। তারা ঝিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। শিহাব পড়ে প্রথম শ্রেণিতে আর টিটোন দ্বিতীয় শ্রেণিতে! দুই শিশুই অতিদরিদ্র পরিবারের সন্তান। ফলে স্কুলে যাওয়ার আগে তারা মাঠে কাজ করে।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী স্টেশন থেকে কিছুটা দূরে ঝিনা রেলগেট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ভাঙা রেললাইন দেখে লাল মাফলার দেখিয়ে তেলবাহী ট্রেনটি রক্ষা করে।
শিশুর দুইটির পিতার নাম যথাক্রমে সুমন আলী ও শহিদুল ইসলাম। তাদের বাড়ি রেল লাইন সংলগ্ন ঝিনা গ্রামে।
সিহাব ও টিটোন জানায়, সকালে পাশের বিলের জমি থেকে থেকে রেল লাইন ধরে তারা বাড়ি ফিরছিল। এমন সময় তারা দেখে রেল লাইন ভাঙা। এরই মধ্যে সামনে ট্রেন আসতে দেখে তাৎক্ষণিকভাবে তারা দু’জনে বুদ্ধি খাটিয়ে রেললাইনের ওপর মাফলার টেনে ধরে। এতে ট্রেনটি থেমে যায়।
ট্রেনটির চালক কেএম মহিউদ্দিন জানান, দুই শিশু লাল কিছু একটা দিয়ে দিয়ে ট্রেন থামানোর সিগন্যাল দিচ্ছে দেখে প্রথমে গুরুত্ব দেইনি। ভেবেছিলান ট্রেন থামাবো না। কিন্তু অনেক কাছে চলে যাওয়ার পরও ওই দুই শিশু রেললাইন থেকে সরছে না দেখে ট্রেনটি থামিয়ে দেই।
‘দুই শিশুর বুদ্ধিমত্তার কারণে বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে তেলবাহী ট্রেনটি’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আড়ানী স্টেশনের মাস্টার নয়ন আহম্মেদ জানান, তেলবাহী ট্রেনটি খুলনা থেকে রাজশাহী যাচ্ছিল। সিহাব ও টিটোন নামের ওই দুই শিশুর বুদ্ধিমত্তার কারণে ট্রেনটি দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।
বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর রেললাইন মেরামতের দুই ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।