যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির মোকাবিলায় আত্মরক্ষার লক্ষ্যে উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে বলে দাবি করেছে পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়ার দাবি, এসব অস্ত্র বিশ্বের কোনো দেশের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে না।
শুক্রবার রাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু অস্ত্র বিষয়ক এক বৈঠকে এ মন্তব্য করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত উত্তর কোরিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি জ্যা জং ন্যাম। তিনি বলেন, মার্কিন পরমাণু হুমকির মোকাবিলায় দেশের অস্তিত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষা করার লক্ষ্যে উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র তৈরি করেছে।
উত্তর কোরিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি সুস্পষ্ট করে বলেন, পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য যদি কাউকে জবাবদিহি করতে হয় তাহলে সে দেশটি যুক্তরাষ্ট্র; উত্তর কোরিয়া নয়।
নিরাপত্তা পরিষদের একই বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন তার আগে বক্তব্য থেকে সরে গিয়ে আলোচনায় বসার জন্য আগে উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে গত সপ্তাহে টিলারসন বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যেকোনো সময় যেকোনো বিষয়ে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
চলতি বছর উত্তর কোরিয়া বেশ কিছু পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। ওয়াশিংটন পিয়ংইয়ংকে সমরাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ করার আহ্বান জানালেও উত্তর কোরিয়া বলছে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর বিদ্বেষী নীতি বন্ধ না হলে পিয়ংইয়ং এ ধরনের পরীক্ষা চালিয়ে যাবে।
কোরিয় উপদ্বীপে ট্রাম্প একটি ভয়াবহ বিপজ্জনক পারমাণবিক জুয়া খেলায় মেতে উঠেছেন বলে মন্তব্য করেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র শনিবার (৩ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে একথা বলেন।
পিয়ংইয়ং হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রশাসন ‘আন্তরিকভাবে পরমাণু যুদ্ধ কামনা’ করছে।
উত্তর কোরিয়াকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে ওয়াশিংটন ও সিউল যখন বড় ধরনের যৌথ সামরিক মহড়া করতে যাচ্ছে তখন এ সতর্কবার্তা উচ্চারণ করল পিয়ংইয়ং।
বিবৃতিতে ট্রাম্পকে একটি ‘পারমাণবিক রাক্ষস’ এবং ‘বিশ্ব শান্তি বিনষ্টকারী’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
সোমবার থেকে কোরিয় উপদ্বীপে বিশাল সামরিক মহড়া শুরু করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া। মহড়ায় প্রায় ১২ হাজার মার্কিন সেনা ও ২৩০টি জঙ্গিবিমান অংশ নেবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
উত্তর কোরিয়া গত মঙ্গলবার এ যাবতকালের সবচেয়ে শক্তিশালী আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর পর ওয়াশিংটন ও সিউল ওই মহড়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে।
ওই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পরদিন জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে উত্তর কোরিয়াকে ‘পুরোপুরি ধ্বংস’ করে ফেলার হুমকি দেন। এ ছাড়া, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আরো ‘কঠোর নিষেধাজ্ঞা’ আরোপের হুমকি দিয়েছেন।