ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, জেরুজালেমকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ভুল করেছেন তার ফলে মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য শক্তিশালী হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে ইরানের বিপ্লবী সাংস্কৃতিক উচ্চ পরিষদের বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রুহানি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উগ্র তাকফিরি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর তাণ্ডবের কারণে জেরুজালেমের ওপর ইহুদিবাদীদের দখলদারিত্বের বিষয়টি চাপা পড়ে গিয়েছিল। মুসলমানদের প্রথম ক্বেবলা আল-আকসা মসজিদের শহর জেরুজালেম সম্পর্কে ট্রাম্পের বিতর্কিত ঘোষণার ফলে ফিলিস্তিন ইস্যু আবার মুসলিম বিশ্বের এক নম্বর সমস্যার স্থানে ফিরে এসেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, মুসলিম বিশ্বের সামনে ফিলিস্তিনকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের দখলদারিত্ব থেকে মুক্তি দেয়ার মতো আর কোনো সমস্যা নেই। তিনি আরো বলেন, ‘ট্রাম্পের ঘোষণার পর আমরা ফিলিস্তিনিদেরকে নতুন করে ইন্তিফাদা আন্দোলন শুরু করতে দেখছি।’
সারাবিশ্বের বিরোধিতা উপেক্ষা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। একইসঙ্গে তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করারও নির্দেশ দেন তিনি।
১৯৬৭ সাল থেকে জেরুজালেম দখল করে রেখেছে ইহুদিবাদী ইসরাইল। মুসলমানদের প্রথম ক্বেবলা আল-আকসা মসজিদ এই শহরে অবস্থিত এবং এটি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিন্ন এবং ইয়েমেনে চলমান আগ্রাসন বন্ধ করলে সৌদি আরবের সঙ্গে তার দেশ সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি। রবিবার (১০ ডিসেম্বর) ইরানের পার্লামেন্টে দেয়া এক বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ইসরাইলের প্রতি আনুগত্য বন্ধ করার পাশাপাশি নিজের এবং আঞ্চলিক জাতিগুলোর ওপর আস্থা ও নির্ভরশীলতা বাড়ালে সৌদি আরবের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।
রুহানি বলেন, সৌদি আরবের উচিত দারিদ্রপীড়িত ইয়েমেনি জনগণের ওপর নির্বিচারে বোমা হামলা বন্ধ করা এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার জন্য যে দৌড়ঝাপ করছে সেখান থেকে সরে আসা। তিনি বলেন, “আমরা সৌদি আরবের কাছ থেকে দু’টি জিনিস প্রত্যাশা করছি। আর তা হলো ইসাইলের সঙ্গে বিভ্রান্তমূলক বন্ধুত্ব ছিন্ন করা এবং ইয়েমেনের ওপর অমানবিক বোমা বর্ষণ বন্ধ করা।”
রুহানি তার অন্য এক বক্তব্যে জেরুজালেম খ্যাত আল কুদস বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোলান্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বিতর্কিত সিদ্ধান্তের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, তার এ পদক্ষেপ বিনা জবাবে ছেড়ে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, এ অঞ্চলে মার্কিন সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো পরাজিত হওয়ার পর ইহুদিবাদী ইসরাইলের সহযোগিতায় আমেরিকা নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। পবিত্র আল কুদস বা বায়তুল মুকাদ্দাস বিষয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত একটি আগ্রাসন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।নাল্ড ট্রাম্পের জামাই জারেদ কুশনার এ প্রস্তাব তৈরি করেছেন এবং সৌদি যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমানের মাধ্যমে তা উপস্থাপন করা হয়েছে। কুশনার হচ্ছেন ট্রাম্পের সিনিয়র উপদেষ্টা এবং তিনি ইহুদি।