ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় শুক্রবার রাতে আবার ইহুদিবাদী ইসরাইলের সামরিক বাহিনী নতুন করে বিমান ও ট্যাংক নিয়ে হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
ফিলিস্তিনের বায়তুল মুকাদ্দাস শহর নিয়ে যখন গোটা মধ্যপ্রাচ্যে তীব্র উত্তেজনা চলছে তখন এই হামলার ঘটনা ঘটলো। ইহুদিবাদী সেনারা গাজা উপত্যকার বেইত হানুন শহরের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে কামানোর গোলা বর্ষণ করে। এ শহরের পূর্বাঞ্চলে কয়েকজন হামাস যোদ্ধার ওপরও বিমান হামলা চালায় ইসরাইল।
এছাড়া, গাজার বেইত লাহিয়া শহরে বিমান থেকে বোমা বর্ষণ করে ইসরাইল। গাজা উপত্যকার উত্তরে শেখ জায়েদ এলাকায় ইসরাইলি বিমান থেকে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়।
গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ছয় শিশুসহ প্রায় দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
এদিকে ইসরাইল দাবি করেছে, গাজা থেকে রকেট ছোঁড়ার পর এসব হামলা চালানো হয়। ইসরাইলের বিমান ও ট্যাংক হামলার কারণে আশংকা করা হচ্ছে-যেকোনো সময় হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষ শুরু হতে পারে।
ইসরাইলি সেনাদের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিলিস্তিনের জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার পর ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভের সময় ইসরাইলি সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকেই পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ-ধর্মঘট করেছে। তাদের ঠেকাতে শত শত অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে ইসরাইল।
বিক্ষোভকারীদের গাড়ির টায়ার জ্বালানো এবং পাথর ছুড়ে মারার জবাবে ইসরাইলি সেনারা টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়াসহ তাজা গুলিবর্ষণও করেছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দাবি, গাজা থেকে ইসরাইলে দুটো রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। গাজায় ইসরাইলি সেনারা গুলিও করেছে। এ ঘটনায় ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলের সীমান্ত বেষ্টনী এলাকায় সেনাদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়েছে।
এছাড়া জেরুজালেমসহ বেথলেহেম, রামাল্লাহ ও অন্যান্য শহরগুলোতেও বিক্ষোভ-সংঘর্ষ হয়েছে। এসব সংঘর্ষে ৪৯ জন আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে রেড ক্রিসেন্ট।
ভয়াবহ পারমাণবিক জুয়া খেলায় মেতেছে ট্রাম্প
এদিকে কোরিয় উপদ্বীপে ট্রাম্প একটি ভয়াবহ বিপজ্জনক পারমাণবিক জুয়া খেলায় মেতে উঠেছেন বলে মন্তব্য করেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র শনিবার এক বিবৃতিতে একথা বলেন।
পিয়ংইয়ং হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রশাসন ‘আন্তরিকভাবে পরমাণু যুদ্ধ কামনা’ করছে।
উত্তর কোরিয়াকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে ওয়াশিংটন ও সিউল যখন বড় ধরনের যৌথ সামরিক মহড়া করতে যাচ্ছে তখন এ সতর্কবার্তা উচ্চারণ করল পিয়ংইয়ং।
বিবৃতিতে ট্রাম্পকে একটি ‘পারমাণবিক রাক্ষস’ এবং ‘বিশ্ব শান্তি বিনষ্টকারী’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। সোমবার থেকে কোরিয় উপদ্বীপে বিশাল সামরিক মহড়া শুরু করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া। মহড়ায় প্রায় ১২ হাজার মার্কিন সেনা ও ২৩০টি জঙ্গিবিমান অংশ নেবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
উত্তর কোরিয়া সম্প্রতি এ যাবতকালের সবচেয়ে শক্তিশালী আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর পর ওয়াশিংটন ও সিউল ওই মহড়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে।
ওই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পরদিন জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে উত্তর কোরিয়াকে ‘পুরোপুরি ধ্বংস’ করে ফেলার হুমকি দেন। এ ছাড়া, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আরো ‘কঠোর নিষেধাজ্ঞা’ আরোপের হুমকি দিয়েছেন।