
খুলনাকে ১৯ রানে হারিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জিতলো রংপুর। ১৪৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে গিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১২৮ গিয়ে শেষ হয় খুলনার ইনিংস। এর ফলে সুপার ফোরে গেল রংপুর।
রংপুরের করা ১৪৭ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা দারুণ হয়েছিল খুলনার। মাইকেল কিলিঞ্জার ও নাজমুল হোসেন শান্ত উদ্বোধনী জুটিতেই তুলে নেন ৬০ রান। শান্তকে ফিরিয়ে রংপুরকে ম্যাচে ফেরান অপু। এরপর একে একে আফিফ, মাহমুদউল্লাহ, নিকোল পুরান, কিলিঞ্জার ও কার্লোস বার্থওয়েটকে ফিরিয়ে ম্যাচে পুরোপুরিভাবে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করেন মাশরাফিরা।
দুটি ছয় মেরে ম্যাচে খুলনার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখেন জফরা আর্চার। রান আউটের ফাঁদে পড়ে আর্চার ফিরলে খুলনার শেষ আশাও শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ১২৮ রান করতে সমর্থ হয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।
এর আগে মিরপুর শের ই বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ৩৮তম ম্যাচে খুলনা টাইটানসকে ১৪৮ রানের টার্গেট দিয়েছে রংপুর রাইডার্স।
রবিবার শেষ চারে উঠার লড়াইয়ে খুলনার বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিং নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৭ রান সংগ্রহ করে রংপুর রাইডার্স। মোহাম্মদ মিথুন দলের হয়ে ৩৫ বলে ৪ ছক্কা ও ২ চারে সর্বোচ্চ ৫০ রান সংগ্রহ করেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৮ রান এসেছে ক্রিস গেইলের ব্যাট থেকে ৩৮ রান। খুলনার হয়ে আর্চার ২টি , ইরফান, শফিউল, রাহি ও ব্রাথহোয়াইট ১টি করে উইকেট নেন।
রংপুর ও খুলনা দুই দলেরই এটি ১১তম ম্যাচ। অবশ্য মাহমুদউল্লাহর খুলনা কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। তারা ১৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে। আর মাশরাফির দলের সংগ্রহ ১২ পয়েন্ট।
রংপুর টানা কয়েকজটি ম্যাচে দারুণ পারফর্ম করে শীর্ষ চারে উঠে আসে। এখনো তারা চতুর্থ স্থানেই আছে।
সবার আগে কোয়ালিফাই করে খেলা নিশ্চিত করেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। ১০ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে ২০১৫ সালের চ্যাম্পিয়নরা।
রংপুর রাইডার্স
দেশি : মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোহাম্মদ মিঠুন, রুবেল হোসেন, সোহাগ গাজী, শাহরিয়ার নাফীস, নাজমুল হোসেন অপু, জিয়াউর রহমান, ফজলে রাব্বী, আবদুর রাজ্জাক, ইবাদত হোসেন, ইলিয়াস সানি, নাহিদুল ইসলাম।
বিদেশি : ক্রিস গেইল, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, রবি বোপারা, ডেভিড উইলি, অ্যাডাম লিথ, জনসন চার্লস, স্যামুয়েল বদ্রি, থিসারা পেরেরা, কুশল পেরেরা, স্যাম হাইন, সামিউল্লাহ শেনোয়ারি, জহির খান।
খুলনা টাইটানস
দেশি: মাহমুদউল্লাহ, মোশাররফ হোসেন, শফিউল ইসলাম, আরিফুল হক, নাজমুল হোসেন (শান্ত), আবু জায়েদ, আফিফ হোসেন, ইয়াসির আলী, ইমরান আলী, মুক্তার আলী, ধীমান ঘোষ, সাইফ হাসান।
বিদেশি: জুনাঈদ খান, সরফরাজ আহমেদ, সাদাব খান, বেনি হাওয়েল, কার্লোস ব্রাফেট, চ্যাডউইক ওয়ালটন, ক্রিস লিন, কাইল অ্যাবট, রাইলি রুশো, সিকুগে প্রসন্ন, শিহান জয়াসুরিয়া, জফরা আর্চার, মাইকেল ক্লিঙ্গার।
সিলেটের বিশাল জয়
বিপিএলে চিটাগং ভাইকিংসকে হারিয়ে ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছে সিলেট।
৬৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কোনো উইকেটই হারায়নি সিলেট সিক্সার্স। খেলতে হয়েছে মাত্র ১১.১ ওভার। সিলেটের দুই ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আন্দ্রে ফ্লেচার চিটাগংয়ের বোলারদের কোনো সুযোগই দেননি। রিজওয়ান ৩৬ ও ফ্লেচার ৩২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পঞ্চম আসরের ৩৭তম ম্যাচে সিলেট সিক্সার্সের বোলারদের তোপের মুখে পড়ে ৬৭ রানে অলআউট হয়েছে। এবারের আসরে এটিই সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড। ১২ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে চিটাগং ভাইকিংসের ব্যাটস ম্যানরা তাদের ৬৭ রানেই ইনিংস গুটিয়ে নেয়। এদিন নাসির নির্ধারিত ৪ ওভার বল করে ৩১ রানে ৫টি উইকেট তুলে নেন।
তার আগে রবিবার বেলা ১টায় চিটাগং ভাইকিংসের মুখোমুখি হয়েছে সিলেট সিক্সার্স। যেখানে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সিলেট অধিনায়ক নাসির হোসেন।
টিচাগাং প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম ওভারেই পথ হারায় চিটাগং। নাসির হোসেনের করা প্রথম ওভারে ফিরে যান লুক রঞ্চি ও সৌম্য সরকার। চিটাগংয়ের তৃতীয় ওভারে আবার আঘাত হানেন নাসির। ফিরিয়ে দেন লুইস রিসকে। পরের ওভারে সিকান্দার রাজাকে ফেরান শরিফুল্লাহ। ৪৫ রানের মধ্যে তানভীর হায়দার ও স্টিয়ান ভ্যান জাইলকে ফিরিয়ে চিটাগংকে খাদের কিনারে নামিয়ে দেন নাসির। ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নেন এই স্পিনার।
এরপর নাবিল সামাদ ও শরিফুল্লাহ মিলে গুটিয়ে দেন চিটাগং ভাইকিংসকে। নাবিল তিনটি ও শরিফুল্লাহ নেন বাকি দুটি উইকেট।
সাত দলের মধ্যে সিলেটের অবস্থানের কারনে এ ম্যাচটি তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কেননা লিগের বাকি ম্যাচে জয় পেলে, পাশপাশি রংপুর রাইডার্স যদি শেষ দুই ম্যাচে হেরে যায়। তবে শেষ চার নিশ্চিত করে প্লে-অফ খেলতে পারবে দলটি। নাসিরদের শেষ ম্যাচটি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে।
অন্যদিকে চিটাগংয়ের এবারের মৌসুমে আর কোনো আশাই নেই। ১০ ম্যাচে মাত্র দুটিতে জয় পাওয়া দলটি সবার শেষে।