স্পর্শকাতর পারমাণবিক তথ্য ফাঁস করার অভিযোগে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক প্রকল্পের এক শীর্ষ কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। ওই কর্মকর্তা উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক স্থাপনা নির্মাণের দায়িত্বে (ইনচার্জ) ছিলেন। এ খবর দিয়েছে জাপানের পত্রিকা আসাহি শিমবুন।
আসাহি শিমবুন’কে উত্তর কোরিয়ার একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলেন, অসমর্থিত তথ্য অনুযায়ী, ব্যুরো ১৩১ নামের পারমাণবিক প্রকল্পের একজন পরিচালককে সম্প্রতি তার পদ থেকে অপসারণ করা হয়। এরপর, সামরিক গোপন তথ্য পাচারের সন্দেহে তাকে হত্যা করা হয়।
উল্লেখ্য, ব্যুরো ১৩১ হলো উত্তর কোরিয়ার সাধারণ আণবিক শক্তি ব্যুরো। এটি উত্তর কোরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্প নির্মাণের সঙ্গে জড়িত। ওই পরিচালক প্রকল্পের শুরু থেকেই ওই ব্যুরোতে একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আসাহি শিমবুন ধারণা করছে, উত্তর কোরিয়ার ষষ্ঠ পারমাণবিক পরীক্ষায় বিলম্ব এবং ভূগর্ভস্থ একটি টানেলে বিস্ফোরণ হওয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ওই কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির মোকাবিলায় আত্মরক্ষার লক্ষ্যে উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে বলে দাবি করেছে পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়ার দাবি, এসব অস্ত্র বিশ্বের কোনো দেশের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে না।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু অস্ত্র বিষয়ক এক বৈঠকে এ মন্তব্য করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত উত্তর কোরিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি জ্যা জং ন্যাম। তিনি বলেন, মার্কিন পরমাণু হুমকির মোকাবিলায় দেশের অস্তিত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষা করার লক্ষ্যে উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র তৈরি করেছে।
উত্তর কোরিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি সুস্পষ্ট করে বলেন, পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য যদি কাউকে জবাবদিহি করতে হয় তাহলে সে দেশটি যুক্তরাষ্ট্র; উত্তর কোরিয়া নয়।
নিরাপত্তা পরিষদের একই বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন তার আগে বক্তব্য থেকে সরে গিয়ে আলোচনায় বসার জন্য আগে উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে গত সপ্তাহে টিলারসন বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যেকোনো সময় যেকোনো বিষয়ে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
চলতি বছর উত্তর কোরিয়া বেশ কিছু পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। ওয়াশিংটন পিয়ংইয়ংকে সমরাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ করার আহ্বান জানালেও উত্তর কোরিয়া বলছে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর বিদ্বেষী নীতি বন্ধ না হলে পিয়ংইয়ং এ ধরনের পরীক্ষা চালিয়ে যাবে।