রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে ঢাকা দেরি করছে বলে অভিযোগ করেছে নাইপেদো।
দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির কার্যালয়বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) জ হতয় স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।
২৫ আগস্ট মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান শুরুর সময় থেকে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। নতুন পুরোনো মিলিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ঢাকার আহ্বান ও আন্তর্জাতিক মহল থেকে চাপ সৃষ্টি সত্ত্বেও মায়ানমারের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক সহায়তার অর্থ হিসেবে কোটি কোটি ডলার পাওয়ার আগপর্যন্ত প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় না বাংলাদেশ।
মায়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চির মুখপাত্র জ হতয় বলেন, যেকোনো সময় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রস্তুত মায়ানমার। তবে রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে ফেরতের এই প্রক্রিয়া হবে ১৯৯০ সালের চুক্তির ভিত্তিতে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেই চুক্তির শর্তাবলী এখনো উপেক্ষা করছে। আমরা (ফেরত প্রক্রিয়া) শুরু করতে চাই, কিন্তু অপরপক্ষ (বাংলাদেশ) এখনো (চুক্তি) মেনে নেয়নি। আর এ কারণে প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়েছে। এটাই প্রধান কারণ।
গত সপ্তাহে মায়ানমারের রাজধানী নেইপিদোতে সীমান্ত মৈত্রী পোস্ট স্থাপনের ব্যাপারে বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়। দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ওই স্মারকে সই করেন। নতুন স্মারক সই হলেও পুরনো চুক্তির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অর্থ দিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বিশাল আশ্রয়শিবির তৈরির পরিকল্পনার কারণেই বাংলাদেশ বিলম্ব করছে বলে অভিযোগ করেন জ হতয়। বুধবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউ লাইট অব মায়ানমারের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত এক সংবাদে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সু চির এই মুখপাত্র বলেন, বর্তমানে তারা ৪০০ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে। এই অর্থ পাওয়ায় আমরা এখন শরাণার্থী প্রত্যবাসন কর্মসূচি বিলম্বিত হওয়ার শঙ্কায় আছি। তিনি বলেন, তারা আন্তর্জাতিক ভর্তুকি পেয়েছে। আমরা এখন শঙ্কিত যে, তারা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো নিয়ে অন্য চিন্তা করতে পারে।
আমরা ঠিক পথে আছি: মাহমুদ আলী
এদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে সে কমিটির বাংলাদেশি সদস্যদের নাম আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মায়ানমারের কাছে পাঠানো হবে। নভেম্বরের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ তার কার্যক্রম শুরু করবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা ঠিক পথে আছি।’