প্লাস্টিক সার্জারি করে নিজের চেহারা পরিবর্তন ও আঙ্গুলের ছাপ মুছে নিজের পরিচয় লুকানোর সময় মেক্সিকোর এক অপরাধ চক্রের দলনেতা নিহত হয়েছেন। কর্মকর্তারা বলছেন, জেসাস মার্টিন নামের সে অপরাধী যখন শহরের একটি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের টেবিলে, তখন বন্দুকধারীরা হঠাৎ সেখানে প্রবেশ করে তাকে হত্যা করে।
পুলিশ বলছে, প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর সাথে বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। তারা বলছে, মার্টিন বেআইনিভাবে পাইপলাইন থেকে জ্বালানি তেল চুরি করে আসছিল। খবর বিবিসির।
মাদক চোরাচালানের পর এ কাজটি মেক্সিকোর দ্বিতীয় বৃহত্তম সংঘটিত অপরাধে পরিণত হয়েছে। অপরাধ চক্রের নেতা হিসেবে মৃত্যু বা গ্রেপ্তার এড়াতে প্লাস্টিক সার্জারির আশ্রয় নেয়ার ক্ষেত্রে জেসাস মার্টিনই প্রথম নন।
এর আগে মাদক চোরাকারবারি দলগুলোর নেতা আমাদো কারিল্লো ১৯৯৭ সালে প্লাস্টিক সার্জারির সময় মারা যায়। কুখ্যাত জ্যাকম গুজম্যান, যিনি এল চ্যাপো নামে পরিচিত, প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে চেহারায় অনেক পরিবর্তন আনার পরেও ২০১৪ সালে পালানোর সময় ধরা পড়ে।
জেসাস মার্টিন পাইপলাইন ছিদ্র করে জ্বালানি তেল বের করে তা স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে আসছিল। জ্বালানি তেল নির্গমন করে তা ব্যস্ত রাস্তায় বাজার মূল্যের চেয়ে অর্ধেক দামে বিক্রি করে দেয়, যার ফলে মেক্সিকোর তেল কোম্পানিগুলো লাখ লাখ ডলার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে।
এসব দলের সর্দাররা বিশেষ ছুটির দিনগুলোতে স্থানীয় এলাকাবাসীদের মাঝে জ্বালানি তেল দান করে তাদের কাছ থেকে সমর্থন আদায়ের জন্য। হাজার হাজার পরিবার এখন এই বেআইনি কাজের সাথে যুক্ত হয়ে গেছে। নিরাপত্তা এবং উন্নতির জন্য স্থানীয়রা তাদের জন্য আশীর্বাদ করে এবং উপহার প্রদান করে।
এটা প্রধানত সংঘটিত হচ্ছে মধ্য পুবেলা প্রদেশের একটি এলাকায় যেখানকার পাইপলাইনগুলো দেশটির ৪০ শতাংশ জ্বালানি তেল সরবরাহ করে এবং মেক্সিকোর তেল কোম্পানি- পেমেক্স ও স্থানীয় সরকারের ওপর যার উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। মেক্সিকান কংগ্রেস গত এপ্রিল মাসে জ্বালানি চুরির অপরাধের ক্ষেত্রে ২৫ বছর পর্যন্ত জেল দেবার শাস্তির বিধান রেখে একটি বিল পাশ করে।
মেক্সিকোতে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ২৬
এর আগে মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলে পুলিশ ও প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি অপরাধ চক্রের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হয়েছে। দেশটির কর্মকর্তারা একথা জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তবর্তী রাজ্য চিহুয়াহুয়ার প্রসিকিউটরের অফিসের মুখপাত্র এডুয়ার্দো এসপারজা বলেন, লাস ভারাস শহরের কাছে ভোরের আগে প্রথমে প্রতিদ্বন্দ্বী মাদক পাচারকারী চক্রের মধ্যে এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পরে সেখানে পুলিশ সদস্যরা এসে পড়লে সংঘর্ষ তীব্রতর হয়।
তদন্ত কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, জুয়ারেজ কার্টেলের সশস্ত্র শাখা ‘লা লিনেয়া’র সদস্য ও সিনালোয়া কার্টেলের হিটম্যানদের মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে।