
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদা বলেছেন কি না সেটা নিশ্চিত হতে হবে, বলে থাকলে সেটি বিএনপিকে নির্বাচনে আনার কৌশল হতে পারে।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিশ্ব খাদ্য দিবসের অনুষ্ঠানে শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার জিয়াউর রহমান নিয়ে যেসব কথা বলেছেন, তা কোনো সংবাদ সম্মেলনে বলেননি। তিনি নির্বাচন কমিশনের ভেতরে বলেছেন। ফলে তিনি কী বলেছেন তা নিশ্চিত হতে হবে। আগামী ১৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক আছে। সেখানে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার সুযোগ হবে।
সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার জিয়াউর রহমান নিয়ে যেসব কথা বলেছেন, তা বিএনপিকে নির্বাচন আনার কৌশলও হতে পারে। সে জন্য মির্জা ফখরুলকে বেশ খুশি খুশি লাগছে। নির্বাচন পর্যন্ত ওই খুশি খুশি ভাব থাকলেই হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এও বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে আওয়ামী লীগ কোনো কোনো অনুগ্রহ ও সুবিধা আশা করে না, নিরপেক্ষতা প্রত্যাশা করে। বাংলাদেশের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সংগতি রেখে নির্বাচন কমিশন কথা বলবে, আওয়ামী লীগ তা আশা করে।
এর আগে দুপুরে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ সংবিধানের বাহিরে অবাস্তব অবান্তর প্রস্তাব দিয়ে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত না করতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচন কমিশনকে গ্রহণ করে সংলাপে অংশগ্রহণ করেছে ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের যোগ্যতা নিয়েও বিএনপি প্রশ্ন তুলেছিল। বিএনপি নির্বাচন কমিশনে সংলাপে অংশগ্রহণ করায় সাধুবাদ জানাই, ধন্যবাদ জানাই। আমরা আশা করি তারা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’
রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচন কমিশনের সংলাপ শেষ করে খোশমেজাজে ছিল। কিন্তু তাদের খোশমেজাজে শেষ পর্যন্ত যেন থাকে। ’
বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিএনপি বলেছে সংসদ ভেঙে দিতে হবে। কিন্তু সংবিধানে তো নেই সংসদ ভেঙে নির্বাচন দিতে হবে। আপনারা চান সেনাবাহিনী দিয়ে পুলিশের কাজ করাতে। সেনাবাহিনীর একটা সুনাম আছে। তাদের সুনাম, মান মর্যাদা নষ্ট করার চেষ্টা করবেন না। তাদেরকে দিয়ে পুলিশের যে দায়িত্ব পালন করে সে দায়িত্ব পালন করানোর চেষ্টা করবেন না।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে সরকারের অধীনে নয়, । সরকার শুধু রুটিন অনুযায়ী কাজ করবে। তাই সকল রাজনৈতিক দলের সংলাপ নির্বাচন কমিশনের সাথে হচ্ছে।’
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বলেন, ‘মায়ানমারের রোহিঙ্গা বিষয়ক মন্ত্রী বলেছেন প্রতিদিন ১০০ জন করে রোহিঙ্গা সে দেশে ফেরত নিবেন। যদি তা হয় তাহলে ২৭ বছর লাগবে ৬ লাখ রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে।’
বিএনপির সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার মাধ্যমে যেখানে সারা বিশ্ব শেখ হাসিনার প্রশংসা করছে সেখানে একটি দল ও সেই দলের নেত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তারা (বিএনপি) নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি।’
বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদের সভাপতি চিত্ত রঞ্জন দাসের সভাপত্বিতে আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামছুল হক টুকু, সানজিদা খানম, আওয়ামী লীগ নেতা বলরাম পোদ্দার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসান ইমাম প্রমুখ।