যুক্তরাষ্ট্র ১শ’২০ দিন বন্ধ রাখার পর আবারো শরণার্থী নেয়া শুরু করতে যাচ্ছে। তবে ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’ ১১টি দেশ থেকে শরণার্থীদের নেয়া হবে না। তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। এদের অধিকাংশই মুসলিম অধ্যুষিত দেশ। মঙ্গলবার কর্মকর্তারা একথা জানান। খবর এএফপি’র।
নিরাপত্তা প্রক্রিয়া পর্যালোচনা এবং আরো জোরদার স্ক্রিনিং প্রক্রিয়া স্থাপনে কর্মকর্তাদের অনুমতি দেয়ার পর এ সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। গত জানুয়ারি থেকেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে জোর প্রচেষ্টা চালান এবং গত জুন মাসের শেষের দিকে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া এক সিদ্ধান্তের পর এক্ষেত্রে চূড়ান্ত অগ্রগতি হয়।
মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন সেবা সংস্থার শরণার্থী বিষয়ক সহকারি পরিচালক জেনিফার হিগিন্স জানান, পর্যবেক্ষণের ফলাফলের অংশ হিসেবে প্রার্থীদের ‘বর্ধিত’ স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের উপস্থিতি এবং যোগসূত্র খতিয়ে দেখা হবে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমেরিকার জনগণের নিরাপত্তা হচ্ছে আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’ এদিকে ট্রাম্প মঙ্গলবার রাতে শরণার্থী বিষয়ে নতুন করে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন।
রোহিঙ্গা শরণার্থী আসার সংখ্যা কমেছে: জাতিসংঘ
জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বলছে, মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সহিংসতার কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের সংখ্যা গত কয়েকদিনে লক্ষণীয় রকমে কমে গেছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আই ও এমের একজন মুখপাত্র বলেছেন, মায়ানমার ছেড়ে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসা যে একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে এমন কথা বলার সময় এখনো আসে নি। খবর বিবিসির।
তিনি বলেন, তবে ওই মুখপাত্র বলেছেন, সীমান্ত এলাকার কাছে মাঠ পর্যায়ে তাদের যে দলগুলো কাজ করছে, তারা পালিয়ে আসা লোকের সংখ্যা নিশ্চিতভাবেই কমেছে বলে খবর দিচ্ছে।
সংবাদদাতা জিল ম্যাকগিভারিং বলছেন, এর সাথে বাংলাদেশের কোস্টগার্ডদের বক্তব্যের মিল রয়েছে – যারা বলছে গত কয়েকদিনে তারা নদী পার হয়ে কোন নৌকা আসতে দেখে নি।
রবিবার প্রকাশ করা ‘ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ’-এর এক বিজ্ঞপ্তিতেও বলা হয় গত দু’ দিনে সীমান্ত পার হয়ে আসা লোকের সংখ্যা কমেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে বলা হয়, অল্প সংখ্যক লোক এই সময়ে কক্সবাজারে এসেছে বলে লক্ষ্য করা গেছে।
বাংলাদেশে আগত মায়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪ লক্ষ ৩০ হাজার।
অন্যদিকে মায়ানমারে কর্মরত একটি ত্রাণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির প্রধান এবং সাবেক ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড মিলিব্যান্ড বলেছেন, যে সব দেশ বর্মী সেনাবাহিনীকে সমর্থন দেয় তাদের উচিত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধের জন্য তাদের প্রভাবকে কাজে লাগানো।
তিনি বলেন, এ সমর্থনকে মানবাধিকার লংঘনের কাজে ব্যবহার করা চলে না।
মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছে তাতে সেখানে ‘জাতিগত শুদ্ধি অভিযান’ চলছে বলে অভিযোগও উঠেছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানাচ্ছে, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ‘বিশাল পরিমাণে’ আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন।
শরণার্থী সংক্রান্ত জাতিসংঘের হাই কমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি কক্সবাজারের শরণার্থী সংস্থা বলেছেন, এ এক বিরাট চ্যালেঞ্জ।