
রোহিঙ্গা মুসলিমরা মিয়ানমারের জনগোষ্ঠী নয়; ব্রিটিশরা তাদের এদেশে নিয়ে এসেছিলো। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করার সময় এই ঔদ্ধতপূর্ণ উক্তি করেছেন দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং লাইং । গতমাসেও তিনি একই ধরনের বক্তব্য দিয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্কট মার্সেলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সেনাপ্রধান মিন অং লাইং। ওই বৈঠকের ওপর নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন মিয়ানমার সেনাপ্রধান।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে মিয়ানমারের সবচাইতে ক্ষমতাধর ব্যক্তিটি দাবি করেন, রোহিঙ্গা একটি ‘বাঙালি’ শব্দ এবং তারা এখন যে সংকট মোকাবেলা করছে তার জন্য মিয়ানমারের কোনো দায় নেই। ব্রিটিশ উপনিবেশিকরাই এই সমস্যাটি তৈরি করেছিলো।
তিনি রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘মিয়ানমারের জনগণ তাদের এদেশে আনেনি। ব্রিটিশ উপনিবেশিকরাই তাদের এখানে নিয়ে এসেছিলো।’
মার্সেলের সঙ্গে আলোচনার সময় তিনি ‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের স্থায়ী বাসিন্দা নয়’ বলে উল্লেখ করে বলেন, দলিল দস্তাবেজে এটা প্রমাণিত যে, এখানে তাদেরকে কেউ রোহিঙ্গা বলতো না। উপনিবেশিক আমলেও তাদের বাঙালি হিসেবেই উল্লেখ করা হতো।
গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের কয়েকটি সেনাপোস্টে সন্ত্রাসী হামলার জের ধরে রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বার্মিজ সেনারা। তাদের হামলা থেকে বাঁচতে ৫ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
রোহিঙ্গা সংকট জিইয়ে রাখার জন্য ব্যক্তিগতভাবে মিন অং লাই-ই দায়ী বলে মনে করে থাকে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। যদিও এ নিয়ে কোনো হেলদোল নেই মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের। তিনি বাংলাদেশের শরণার্থী সংকটকে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘রোহিঙ্গারা তাদের আসল দেশে ফিরে যাচ্ছে।’
তিনি বাংলাদেশের দিকে ইঙ্গিত করে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে আরো বলেন , ‘তারা বাঙালি এবং বাংলা তাদের প্রকৃত দেশ। এ কারণে যাদের সঙ্গে তাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও কৃষ্টির মিল রয়েছে এবং যেখানে তারা নিজেদের নিরাপদ মনে করবে, তাদের সেইসব দেশেই আশ্রয় নেয়া উচিত।’
তবে মিয়ানমার সেনাপ্রধানের এই বিবৃতি সত্য নয়। ঐতিহাসিকরা বলছেন, ব্রিটিশ শাসন শুরু হওয়ার বহু আগে থেকেই রোহিঙ্গারা রাখাইনে বসবাস করছিলো।
সূত্র: আল জাজিরা