
টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি পুরো সফর রীতিমত লজ্জায় ডুবিয়ে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেটদল। হতাশার সিরিজ শেষে করে বিমানবন্দরে কোনো ক্রিকেটার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি।
মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌছায় টাইগার বাহিনী।
প্রায় প্রত্যেকেই গণমাধ্যম এড়িয়ে ব্যক্তিগতভাবে বিমানবন্দরে ছেড়েছেন। সবার আগেই দ্রুত বিমানবন্দর ছেড়েছেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
দারুণ ফর্মে থাকা বাংলাদেশ এবার আফ্রিকা সফরে গিয়ে নিজেদের ভাগ্য বদলাতে পারেনি। সফরের সবগুলো সিরিজে হোয়াইটওয়াশের লজ্জার মধ্য দিয়ে সফর শেষ করেছে বাংলাদেশ। প্রথম টি-টোয়েন্টির প্রথম ম্যাচ ছাড়া সফরের সবগুলো ম্যাচেই টাইগারদের শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে। প্রত্যাশার বেলুন নিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু টাইগারদের ফিরতে হচ্ছে শূন্য হাতে।
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ দিয়েই বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রবেশ করেছে তিন অধিনায়কের যুগে। টেস্টে মুশফিক, ওয়ানডেতে মাশরাফি ও টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্বের ঝান্ডা উঠেছে সাকিবের হাতে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে কোনো অধিনায়কই সফল হতে পারেননি।
সফরের সব ক’টি ম্যাচে হেরে পরাজয়ের লজ্জার রেকর্ড গড়েছে টাইগাররা। শেষ ম্যাচে ২২৫ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে রান করেছে ১৪১। এতে শেষ ম্যাচেও ৮৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছেন সাকিবরা। ভিন্ন তিন ফরমেটের সিরিজে মোট ৭টি ম্যাচ খেলেও জয়ের দেখা পায়নি সফরকারীরা। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের হার ৮৩ রানের বিশাল ব্যবধানে, সঙ্গে টেস্ট-ওয়ানডের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হোয়াইটওয়াশ (২-০)।
টি২০ সিরিজের শেষ ম্যাচে দাঁড়াতেও পারলো না সাকিবরা। পাঁচ উইকেট হারিয়ে যখন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে জয়ের জন্য হাঁটছে বাংলাদেশ, ঠিক তখনই যেন ঝড়ো হাওয়া সব কিছু গুড়িয়ে দেয়। তবে এবার সৌম্য সরকার কিছুটা লড়াই করে এগিয়েছেন দলকে। ৪৪ রান করে ফ্যাঙ্গিসোর বলে হ্যান্ডরিকসের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। তারপর আউট হন লিটন দাস। প্রেটোরিয়াসের বলে ছক্কা হাাঁকাতে গিয়ে ফ্রাইলিংকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।
এর আগে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন ওপেনার ইমরুল কায়েস। চার বল খেলে ছয় রান করেন তিনি। আর চতুর্থ ওভারে জেপি ডুমিনির বলে বোল্ড হন সাকিব। চার বল খেলে তিনি করেন ২ রান। পঞ্চম ওভারে উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়েন মুশফিকুর রহিম। পাঁচ বল খেলে তিনি করেন ২ রান। এরপর দেরি করেননি সাব্বিরও। ডুমিনিরি বলে হ্যান্ডরিকসের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজেঘরে ফেরত যান তিনি।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে ২২৪ রান সংগ্রহ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ডেভিড মিলার সেঞ্চুরি করেছেন। ৩৬ বল খেলে ১০১ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন ডেভিড মিলার।
এই রেকর্ড গড়ার দিনে সাতটি চার ও নয়টি ছক্কা মেরেছেন মিলার। ইনিংসের ১৯তম ওভারে ৩১ রান নেন তিনি। ওভারের প্রথম পাঁচ বলে ছক্কা হাঁকান মিলার। শেষ বলে নেন এক রান। এই ওভারে বোলার ছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
ডেভিড মিলারের আগে ৪৫ বলে সেঞ্চুরি করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডের মালিক ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার রিচার্ড লেভি। মিলার ছাড়াও আজ ৫১ বল খেলে ৮৫ রান করেছেন হাশিম আমলা। বাংলাদেশের পক্ষে সাকিব আল হাসান ২টি ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।