গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় যমুনা নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পেয়ে সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া, জুমারবাড়ি, ঘুড়িদহ, সাঘাটা, ভরতখালী ইউনিয়নের অবদা বাঁধের পূর্ব পার্শ্বে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। প্রায় ৩ হাজার বানভাসী মানুষ ওয়াবদা বাঁধসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টায় ভরতখালী ইউনিয়নের ক্ষুদ্রকার পানি সম্পদ প্রজেক্টের নীলকুঠি ভাঙ্গামোড় বাঁধ ও ক্রোচ বাঁধ ভেঙ্গে পশ্চিম পার্শ্বে আরো নতুন পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাদিনারপাড়া ভরতখালী এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের নিচ দিয়ে পানি চুয়ে প্রবাহিত হওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে বাঁধটি। এতে আরো হাজার হাজার একর রোপা আমন ক্ষেত হুমকির মুখে পড়েছে। এলাকার লোকজন সড়ক রক্ষায় চেষ্টা চালাচ্ছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাগেছে, ব্রক্ষ্মপুত্রের পানি ২০.২০ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিপদ সীমার ৩৮ সে.মি অতিক্রম করেছে। এতে উপজেলায় বন্যার পানিতে ভরতখালী ইউনিয়নের কুকড়াহাট থেকে ভরতখালী গো-হাট পর্যন্ত মিনি বিশ্বরোড ভাঙ্গনের আশংকা দেখা দিয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে বালুর বস্তা ফেলে রাস্তা রক্ষা করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ী নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে নতুন নতুন অঞ্চল। তলিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার একর ফসলি জমি। উপজেলার জুমারবাড়ী ইউনিয়নের ব্যাঙ্গারপাড়া, থৈকরেরপাড়া, পূর্ব-আমদিরপাড়া, কাঠুর, চান্দপাড়া, পূর্ব বসন্তেরপাড়া, নলছিয়া, পূর্ব জুমারবাড়ী সহ ৮হাজার পরিবার পানিবন্দী, সাঘাটা ইউনিয়নের বাঁশহাটা, গোবিন্দী, হাসিলকান্দী, হাটবাড়ী, উঃ সাথালিয়া ও ৫টি আশ্রয় কেন্দেসহ ১৫ হাজার ৫শ’ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। হলদিয়া ইউনিয়নের দিঘলকান্দী, পাতিলবাড়ী, গাড়ামারা সিপি, চরহলদিয়া সহ ২০টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ভরতখালী ইউনিয়নের চিথুলিয়া, বরমতাইড়, উঃ উল্যা, দঃ উল্যা, সানকিভাঙ্গা, বালুরচর, ভাঙ্গামোড়ের প্রায় ৬হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। খেয়াঘাট থেকে ব্যাঙ্গারপাড়া সড়ক ভেঙ্গে চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে এবং রাস্তা দিয়ে কোন প্রকার যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। নৌকা দিয়ে এসব গ্রামের মানুষ চলাচল করছে। এছাড়াও পাটক্ষেত ও ফসলের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ বাড়ীর আঙ্গিনায় পানি উঠেছে। ফলে তাদেরকে সাংসারিক কাজ করতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বন্যা কবলিত অনেক পরিবারই তাদের গরু, ছাগল, হাঁস-মরগি সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বিভিন্ন উঁচু রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে। ঘুড়িদহ ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জামিল মিয়া জানান, বাদিনারপাড়া এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধের সনচুর গেট নামক স্থানে সড়কের নিচ দিয়ে পানি চুয়ে প্রবাহিত হওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে বাধটি । বাধটি ভেঙে গেলে আরো নতুন করে ২টি ইউনিয়নসহ গোটা এলাকার বসতবাড়ী, ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়বে। ভরতখালী ইউপি চেয়ারম্যান ছামছুল আজাদ শীতল জানান, বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, চাহিদার চেয়ে ত্রান অপ্রতুল। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার ঘোষ, আমরা সব সময় এলার্ট আছি। বন্যা দুর্গত এলাকার সকল সমস্যার খোঁজ রাখছি।