গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ যোগাযোগের ক্ষেত্রে সাঘাটা উপজেলার দৃশ্যপট পালটে যাচ্ছে। দীর্ঘ দিনের আকাঙ্খার পর উপজেলার বোনারপাড়া-গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সংযোগ স্থল আলাই কাটাখালী নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ শেষ। গোবিন্দগঞ্জ অংশে সেতুর এপ্রোচ সংযোগ নির্মাণ কাজও শেষ। অপর পার্শে¦ এপ্রোচের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। আগামী ১৫দিনের মধ্যেই সব কাজ সম্পন্ন হওয়ার আশা করা হচ্ছে। সেতুটির উপর দিয়ে পারাপার শুরু হলে দীর্ঘ ৭০কি.মি পথ কমে আসবে। এ উপজেলার মানুষ মাত্র ১০কি.মি পথ পাড়ি দিয়েই পাশ্ববর্তী উপজেলা গোবিন্দগঞ্জ হয়ে বগুড়া কিংবা রাজধানীর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে। অবারিত হবে দু’ উপজেলার মাঝে ব্যবসা বাণিজ্যের।
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুকে ঘিরে রামনগর এলাকাবাসীর মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে। এলাকাবাসী জানান, সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় দীর্ঘ দিনের আকাঙ্খা পূরণ হচ্ছে। বাপ দাদার আমল থেকেই এ স্থানে সেতু নির্মাণের স্বপ্ন ছিল অত্র এলাকাবাসীর- এমনটাই জানালেন রামনগর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন। একই এলাকার কৃষক খাইরুল ইসলাম বলেন, এ এলাকার উৎপাদিত কৃষি পন্য অতি সহজেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো সম্ভব হবে। কনস্ট্রাকশন অব লং ব্রীজ-১, উপজেলা এন্ড ইউনিয়ন রোডস প্রজেক্টের (এলবিসি) আওতায় ওই সড়কের রামনগর বাজার কাটাখালী নদীর উপর ৪০২৫ মি. সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালের ২১ অক্টোবর। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) জিওবি ফান্ডের এ কাজের বাস্তবায়ন করছে ঢাকা দোহারের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুরমা এন্টারপ্রাইজ। ব্যয় হয় ২৪ কোটি ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৬০ টাকা। গত বছরের ২৪ মে সেতুটির কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও যোগাযোগ ক্ষেত্রে অনুন্নত হওয়ায় কন্সট্রাক্শনের মালামাল দেরীতে পৌঁছার দরুণ কাজ শেষ হতে কিছুটা দেরী হল। তবে এলজিইডির স্থানীয় দপ্তর সূত্র জানায়, আগষ্টের শেষের দিকেই সেতু দিয়ে পারাপার সম্ভব হবে। নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে দেখা গেছে, সেতুর পশ্চিম দক্ষিণের এপ্রোচ সড়কের কাজ শেষ। সেতু নির্মাণ বিষয়ে কথা হলে বোনারপাড়ার ব্যবসায়ী জিয়াউল করিম বলেন, সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় গোবিন্দগঞ্জের মহাসড়কের সাথে সংযোগের ক্ষেত্রে প্রায় ৭০ কি.মি রাস্তা কমে আসবে। মানুষ মাত্র ২৫ মিনিটে গোবিন্দগঞ্জে পৌঁছবে বলে জানালেন আরেক ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন। তাদের মতে ৭০ কি.মি ঘুরে লোকজনের প্রায় অতিরিক্ত ২ ঘন্টা ব্যয় হয় গোবিন্দগঞ্জে যেতে হত। এ ব্যাপারে কথা হলে উপজেলা প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলাম জানান, সেতুটির সব কাজই প্রায় শেষ। সাঘাটা অংশের এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হলে কয়েক দিনের মধ্যেই পারাপারের জন্য খুলে দেওয়া হবে।