
রাজধানীর বনশ্রীতে গৃহকর্মী লাইলী বেগমকে (২৫) হত্যার অভিযোগে দায়ের মামলায় গৃহকর্ত্রী শাহনাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার বনশ্রী বি-ব্লকের ৪ নম্বর রোডের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে খিলগাঁও থানা পুলিশ। এছাড়া এ ঘটনায় আগেই আটক গৃহকর্তা মুন্সী মইন উদ্দিন ও বাড়ির দারোয়ান তোফাজ্জলকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছ।
এ ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মতিঝিল জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) শিবলী নোমান। বেলা একটার দিকে রামপুরা থানায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গৃহকর্মী লাইলী বেগমের ভাশুর শহীদুল ইসলাম গৃহকর্তা, গৃহকর্ত্রী, ও বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক তোফাজ্জলকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। স্থানীয়দের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় কর্তব্যকাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশ। এতে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
শিবলী নোমান আরো জানান, তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে গৃহকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে না কি ঘটনাটি আত্মহত্যা।
গৃহকর্ত্রী গ্রেপ্তারের পর স্থানীয়রা ফাঁসির দাবি জানিয়ে মিছিল বের করেন।
খিলগাঁও থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা মো. মনসুর আহমেদ জানান, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে মামলা দুটি করা হয়।
শুক্রবার বনশ্রীর ৪ নম্বর সড়কে জি ব্লকের একটি বাসায় গৃহকর্মী লাইলী বেগমের রহস্যজনক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। লাইলীকে হত্যার অভিযোগ এনে তার পরিবার ও এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন ওই বাড়িতে হামলা চালায় এবং সড়কে গাড়ি ভাঙচুর করে। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক দফা ফাঁকা গুলি ছোড়ে। রাত ১০টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
লাইলীর জা শাহনাজ পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, লাইলীকে হত্যা করা হয়েছে।
গৃহকর্তা মইনুদ্দিন বলছেন, লাইলী বাসায় কাজ করতে আসার পর একটি ঘরে ঢুকে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেন। পরে দরজার ছিটকিনি ভেঙে ঘরের ভেতরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় লাইলীকে পাওয়া যায়।
লাইলি বেগমের বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি থানার কাশিপুর ইউনিয়নে। তিনি খিলগাঁওয়ের হিন্দুপাড়া এলাকায় থাকতেন। লাইলির দুই সন্তান আছে। এদের একজনের নাম আতিকুর (৩), অন্যজনের নাম মরিয়ম (৫)।
লাইলির স্বামী নজরুল ইসলাম কুড়িগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় বাহিনী বিএসএফের কাছে আটক হন। বর্তমানে তিনি দিল্লির একটি কারাগারে বন্দি আছেন বলে জানা গেছে।