
বগুড়ায় নির্যাতনের শিকার ছাত্রীকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ থেকে এ বিষয়ে ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন পুলিশকে দেয়া হয়েছে।
কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক কে এম সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে গত সোমবার মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা পুলিশের কাছে মেয়েটির রিপোর্ট দিয়েছি।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ শুক্রবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘চিকিৎসকদের দেয়া প্রতিবেদনে মেয়েটিকে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। মেয়েটি প্রাপ্তবয়স্ক নয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।’
এদিকে ধর্ষক শহর শ্রমিক লীগের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক তুফান সরকারের স্ত্রীর বড় বোন পৌর কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকির বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে ওই ছাত্রী ও তার মাকে নির্যাতন ও ন্যাড়া করে দেয়ার আলামত জব্দ করেছে পুলিশ।
সূত্র জানায়, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে কাউন্সিলর রুমকি পুলিশকে অনেক তথ্য দেন। সেই সূত্র ধরে বুধবার রাতে অভিযান চালানো হয় শহরের চকসূত্রাপুর এলাকায় রুমকির বাড়িতে। সেখান থেকে পুলিশ ছাত্রী ও তার মায়ের মাথার কাটা চুল, কাঁচি, ক্ষুর, সাবান এবং মারধর করার কাজে ব্যবহৃত স্টিলের পাইপ উদ্ধার করে। চুল কাটা এবং নির্যাতনের ঘটনার চিত্রটি ধারণ করা হয়েছিল ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুমকির মোবাইল ফোন দিয়ে। আলামত হিসেবে সেগুলোও পুলিশ উদ্ধার করেছে।
এছাড়া রুমকির নিজ নামের প্যাডে ওই ছাত্রী ও তার মায়ের কাছ থেকে জোর করে মিথ্যা চুরি করার স্বীকারোক্তি আদায়ের কাগজটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তবে রুমকি পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি কেটে ফেলা চুলের একটি অংশ পুড়িয়ে ফেলেছিলেন।
প্রসঙ্গত, বগুড়ার শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক থাকা কালে গত ১৭ জুলাই কলেজে ভর্তীচ্ছুক ওই ছাত্রীকে ক্যাডার দিয়ে নিজ বাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন তুফান সরকার। এরপর ২৮ জুলাই তুফানের স্ত্রী আশা, আশার বোন কাউন্সিলর রুমকিসহ সহযোগীরা ধর্ষিতা ছাত্রী ও তার মায়ের ওপর নির্মম নির্যাতন চালায় এবং তাদের মাথা ন্যাড়া করে দেয়।
এছাড়া তুফানের বড় ভাই শহর যুবলীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিন সরকারের বিরুদ্ধে অন্য একটি মামলায় জারি থাকা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বৃহস্পতিবার আদালত থেকে সংগ্রহ করেছে পুলিশ। এখন তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
মতিনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়ে এসপি আসাদুজ্জামান বলেন, ওই ঘটনার সঙ্গে নির্যাতন ও ধর্ষণের মামলার কোনো সম্পর্ক নেই। গত ১৮ জুন একটি পরোয়ানা ইস্যু হলেও তালিমের জন্য আমাদের হাতে পৌঁছায়নি। এ বিষয়ে জানতে পেরে বুধবার আমরা আবেদন করে বিজ্ঞ আদালত থেকে পরোয়ানা নিয়ে এসেছি। এ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।সূত্র- আরটিএনএন