গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস এক সপ্তাহ থেকে বন্ধ থাকায় নিয়মিত ক্লাস রুটিন থেকে পিছিয়ে থাকা প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষার্থীর উৎকণ্ঠা বেড়েছে। এতে করে চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলে অনেকটা নেগেটিভ প্রভাব পড়বে বলেও মনে করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
ফুলছড়ি উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বন্যার পানি উঠায় উপজেলার ৮০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং হাইস্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যায়ের ৭টি বিদ্যালয়ে প্রায় এক সপ্তাহ হতে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে করে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে পানি থাকায় এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজারের মতো। দুর্গত এলাকায় শিক্ষার্থীদের আসন্ন পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনি এবং অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগামী নভেম্বরে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনি এবং জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়াও ডিসেম্বর জুড়ে বিভিন্ন শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা হবে। এসব পরীক্ষার আগে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় লেখাপড়া নিয়ে উৎকণ্ঠায় বন্যাদুর্গত ফুলছড়ি উপজেলার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
চর কৃষ্ণমনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আয়নাল হক জানান, বন্যার পানিতে চরাঞ্চলের সব এলাকা তলিয়ে গেছে। বিদ্যালয়ে পানি থাকায় এখনও ক্লাস শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, পাঠদানের পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ের ক্লাস চালু হলে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনি পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ নজর দিতে হবে বলে তিনি জানান। উড়িয়া ইউনিয়নের কালাসোনা গ্রামের অভিভাবক হাসমত আলী জানান, শুধু বিদ্যালয় নয়, প্রত্যেকের বাড়িতে বন্যার পানি উঠায় ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করতে পারেনি। এতে ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ায় অনেক ক্ষতি হচ্ছে। তিনি বলেন, চরাঞ্চলের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন।
ফুলছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হেমায়েত আলী শাহ্ জানান, উপজেলার যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যার কারণে সাময়িকভাবে পাঠদান বন্ধ আছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে এসব বিদ্যালয়ে বিশেষভাবে পাঠদান করানোর ব্যবস্থা করা হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি বলেন, নিয়মিত ক্লাস রুটিন থেকে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের রুটিন সমপর্যায়ে আনার চেষ্টা করা হবে। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে যা যা করা দরকার তাই করা হবে।