আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ইয়েমেনে সৌদিজোটের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য জাতিসংঘের কাছে একযোগে আবেদন জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ ৬২টি মানবাধিকার সংস্থা।
আবেদনে ইয়মেনের প্রায় নজিরবিহীন মানবিক সংকট নিয়ে বিশ্বে সবচেয়ে কম প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এ ছাড়া, সৌদি জোটের রক্তক্ষয়ী আগ্রাসন এবং দেশটির স্বাস্থ্য খাতে তার ভয়াবহ প্রভাবের কথাও এতে তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৫ সালের ২৬ মার্চ থেকে সৌদি আরব ইয়েমেনের বিরুদ্ধে একতরফা আগ্রাসন শুরু করেছে।
ইয়েমেনের আগ্রাসনে জড়িত সৌদি জোটের দেশগুলো হলো- সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, কুয়েত, জর্দান, মরক্কো, মিশর, সেনেগাল এবং সুদান।
ইয়েমেনে বোমা হামলায় নিয়োজিত সৌদিজোটের জঙ্গি বিমানগুলোকে মধ্য আকাশে জ্বালানি ভরার সহায়তা দিচ্ছে মার্কিন নৌবাহিনী। পাশাপাশি কথিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অজুহাতে ইয়েমেনে জঙ্গিবিমান এবং চালকহীন বিমান বা ড্রোন হামলাও করছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরের মার্চে দু’দিনে ইয়েমেনে ৩০ দফা বিমান এবং ড্রোন হামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট কলেরা এবং দুর্ভিক্ষ ইয়েমেনের নিরীহ সাধারণ মানুষের প্রাণে বেঁচে থাকাকে কঠিন করে তুলেছে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক সমন্বয় দফতরের ২৪ আগস্ট দেয়া হিসাবে বলা হয়েছে, দেশটিতে সন্দেহজনক কলেরায় আক্রান্ত হয়েছে পাঁচ লাখ ৪০ হাজার মানুষ। আর মারা গেছে অন্তত দু’হাজার মানুষ। দেশটির ৬০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতিতে পড়েছেন। দেশটির ২৭ শতাংশ শিশু স্কুলে যেতে পারে না। সৌদিজোটের নির্বিচার হামলার স্কুল ভবন বা স্থাপনা ধ্বংস বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ায় এগুলো আর ব্যবহারের উপযোগী নেই। ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে বেতন পাচ্ছেন না দেশটির ৭৩ শতাংশ শিক্ষক।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহায়তায় ইয়েমেনে ১৮টি নির্যাতন শিবির পরিচালনা করা হচ্ছে। এ সব কেন্দ্রে হাজার হাজার ইয়েমেনিকে আটক রেখে নির্যাতন চালানো হচ্ছে বা এখান থেকে গুম হয়ে যাচ্ছে অনেকে।