খবরবাড়ি ডেস্কঃ রংপুর বিভাগীয় পুলিশ রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো.বশির আহম্মদ-পিপিএম (বার) বলেছেন, একটি সড়ক দূর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। পুরো পরিবারে দেখা দেয় অমানবিক-অনামিশা। যে মুখে ‘মা’ বলি আসুন সেই মুখে আমরা জঙ্গীবাদ ও মাদককে না বলি। সড়ক দূর্ঘটনার জন্য মূলত: মালিক-চালক-শ্রমিক ও পুলিশ অনেকটাই দায়ী। সর্বোপরি অসাবধানতা-অসচেতনতাই সড়ক দূর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
গাইবান্ধা ট্রাফিক বিভাগ ও পলাশবাড়ী থানা পুলিশের যৌথ আয়োজনে রোববার দুপুরে উপজেলা পরিষদ টাউন হলরুমে সড়ক দূর্ঘটনা রোধ কল্পে যানবাহন মালিক-শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সর্বস্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, সারাদেশের তুলনামূলক উত্তরাঞ্চলের ৮ জেলায় বিপূলসংখ্যক যানবাহন চলাচল করে। পাশাপাশি বর্তমান সময় রংপুর-বগুড়া জাতীয় মহাসড়কের বেহাল অবস্থা। এসব কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে অহরহ অপ্রত্যাশিত সড়ক দূর্ঘটনা ঘটছে।
যানবাহন মালিকদের অধিক অর্থের যোগান দিতে চালক শ্রমিকদের মধ্যে অতিলোভ কাজ করে। ফলে বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের উপর অতিরিক্ত যাত্রী এবং ওভার লোডিংয়ের কারণে সড়ক দূর্ঘটনা গুলো আরো বাড়ছে।
গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার মো.মাশরুকুর রহমান খালেদের (বিপিএম) সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি সবার আগে সকলকে জনস্বার্থের বিষয়টি মাথায় রাখার আহবান জানিয়ে বলেন হুদাই হর্ণ-বাজায় ভোঁদাই উল্লেখ করে বলেন অনেক চালক রয়েছেন দক্ষ ও অভিজ্ঞ। কিন্তু লাইসেন্স ভুয়া। এক্ষেত্রে সড়ক দূর্ঘটনায় চালকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়।
সবার আগে চালকদের নিজের এবং যাত্রীদের জীবনের প্রতি আন্তরিক হতে হবে। নিজেকে রক্ষা করবো-যাত্রীদেরও রক্ষা করবো।
এ ব্যাপারে পরিবহন মালিকদের এগিয়ে আসতে হবে। পুলিশ কমিশনার তার দীর্ঘ বক্তব্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগের যথেষ্ট ত্র“টি রয়েছে। নানা কারণে সড়ক দূর্ঘটনায় দেশে প্রতি বছর অন্ততঃ আড়াই হাজার লোক মারা যায়। পঁচিশ হাজার লোক আহত হয়ে পঙ্গত্ব বরন করেন। চার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। দূর্ঘটনার অন্যতম প্রধান একটি কারণ ফিটনেস বিহিন লক্কর-ঝক্কর যানবাহন। পরিবহন মালিকদের এসব যানবাহন রাস্তায় না চালানোসহ মহাসড়ক থেকে কলাসহ নানা পণ্যের হাট গুলো সড়িয়ে নিতে দায়ীত্বশীলদের প্রতি আহবান জানান। এছাড়া মহাসড়কে সার্বিক নিরাপত্তা, দূর্ঘটনারোধ ও চুরি-ডাকাতিসহ সামগ্রিক অপরাধ প্রবনতা জিরো টলারেন্সে নিয়ে আসতে চলতি বছরের আগস্ট- সেপ্টেম্বরের মধ্যেই গোবিন্দগঞ্জ থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত গোটা মহাসড়ক জুড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে তিনি জানান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন গাইবান্ধা জেলা ট্রাফিকের টিআইএ রায়হান ইবনে রহমান।

সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আবু বকর প্রধান, সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব একেএম মোকছেদ চৌধুরী বিদুৎ, জেলা পরিষদ সদস্য ও পলাশবাড়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বাবু, গাইবান্ধা বাস মিনিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সোবাহান বিচ্চু। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুর রহমান, মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এনামুল হক মকবুল, ট্রাক ও ট্রাঙ্কলরী মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুদৌলা রাজা, পলাশবাড়ী কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভাপতি আবু তালেব সরকার তারা প্রমুখ।
শেষে জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি আ’লীগ নেতা এনামুল হক মকবুল ও ট্যাঙ্ক মালিক সমিতির সভাপতি মাসুদ করিম পুলিশ কমিশনারকে পৃথক দ’টি ক্রেষ্ট প্রদান করেন। সভায় সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করেন থানা অফিসার ইনচার্জ মাহাবুবুল আলম ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নবীউল ইসলাম। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনে ছিলেন এএসআই ববি আক্তার।