গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের দড়ি জামালপুর গ্রামে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মারধর ও লুটপাটের মিথ্যা অভিযোগে পাচ পুরোহিতের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় এলঅকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এছাড়া এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার পর থেকে জনরোষে পলাতক রয়েছেন মামলার বাদি বস্কিম চন্দ্র।
দড়ি জামালপুর গ্রামের বস্কিম চন্দ্রের সঙ্গে প্রতিবেশি শ্যামল চন্দ্র, রিপন চন্দ্র, পরিতোষ চন্দ্র, দিপক চন্দ্র ও সন্তোষ চন্দ্রের দীর্ঘদিন ধরে জমিসংক্রান্ত ও সামাজিক বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিলো। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গত ২৩ জুলাই বস্কিম চন্দ্র স্ত্রী ও মেয়েকে মারধর এবং ঘরে থাকা নগদ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা, আড়াই ভরি স্বর্ণলংকার, মোবাইল ফোনসহ মালামাল লুটপাটের অভিযোগে পাচ জনের বিরুদ্ধে সাদুল্যাপুর থানায় মামলা করেন।
স্থানীয়রা জানান, গত ২২ জুলাই রাতে হঠাৎ করে বস্কিম চন্দ্রের স্ত্রী জয়ন্তী রানী ও মেয়ে তাপসী রানী ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করতে থাকে। তাদের চিৎকার শুনে লোকজন এগিয়ে গেলে জয়ন্তী রানী ও তাপসী তাদের জানায়, ৭-৮ জন লোক ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়িতে প্রবেশ হাত-পা ও মুখ বেঁধে ঘরে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। তবে সুলতান, পিন্টু মন্ডল, সন্তোষ চন্দ্রসহ প্রতিবেশিরা জানান, বস্কিমের স্ত্রী জয়ন্তী ও মেয়ে তাপসীকে মারধর বা লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। মুলত বস্কিমের সঙ্গে তাদের বিরোধ থাকায় মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর জন্য এমন ঘটনা সাজিয়েছেন তিনি।
আসামি সন্তোষ চন্দ্র, পরিতোষ চন্দ্র জানান, আমরা সমাজের পুরোহিত। আমাদের হয়রানীর উদ্দেশ্যে বস্কিম চন্দ্র এমন সাজানো কল্পকাহিনি দিয়ে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করেছেন। এরআগেও তিনি হুমকি-থামকির অভিযোগে আদালতে মামলা করেন। কিন্তু বিজ্ঞ আদালত মামলাটি খারিজ করে। এরপর কিছুদিন আগে আবারও থানায় মারধরের মিথ্যা অভিযোগ দিলেও পুলিশ বিষয়টি আমলে নেয়নি।
এদিকে, মিথ্যা অভিযোগে মামলার ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। মিথ্যা অভিযোগে পুরোহিতদের ফাঁসানোর ঘটনায় বস্কিমের উপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন এলাকার মানুষ। সেই সঙ্গে সঠিক তদন্ত না করেই মিথ্যা মামলা নেওয়ায় পুলিশের ভুমিকা নিয়েও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে বুধবার দুপুরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজিত লাকজন বস্কিম চন্দ্রের বাড়িতে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তির হন্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ফরিদপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুর আজম ম-ল নিরব বলেন, ‘পুরোহিতদের হয়রানী ও ফাঁসাতে মিথ্যা মামলা করেছেন বস্কিম চন্দ্র। অথচ পুলিশ ঘটনা সম্পর্কে অবগত থেকেও বাদি পক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে একবারে মিথ্যা সাজানো অভিযোগ আমলে নিয়েছে’।
সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরহাদ ইমরুল কায়েস বলেন, ‘বাদির অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা রুজু হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তবে বাদি পক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি’।