গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ ডিবি পুলিশের অভিযানে দূধর্ষ ৪ ডাকাত গ্রেফতার হওয়ায় গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলীয় ইউনিয়ন এরেন্ডাবাড়ীর সর্বত্র জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। পুলিশের তালিকাভুক্ত একাধিক ডাকাতি মামলার আসামি এসব ডাকাতকে একটি পাইপগান, ২০ রাউন্ড গুলি, ৭৫০ পিস ইয়াবা, ১০০ গ্রাম হিরোইন সহ ফুলছড়ি ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী জিঞ্জিরাম নদীর ভাটিয়াপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে জামালপুর জেলার ডিবি পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর মিন্টু চন্দ্র ঘোষ, সাব-ইন্সপেক্টর খায়রুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের ডাকাতিয়ার চর গ্রামের মৃত. হবিবর রহমানের ছেলে আব্দুল করিম (৫০), ভাটিয়াপাড়া গ্রামের মৃত. জামাত উল্যার ছেলে শহিদুল ইসলাম (৩৫), একই গ্রামের ফজর আলীর ছেলে ইনছার আলী (২৭) ও জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার উত্তর গড়ডোবা গ্রামের কাদের আলীর ছেলে আলামিন (৩০)।
জামালপুর জেলা ডিবি পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর মিন্টু চন্দ্র ঘোষ জানান, গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন থেকে গাইবান্ধা, জামালপুর, কুড়িগ্রাম, ময়মনসিংহ সহ নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন জেলার চরাঞ্চলে নৌ-পথে ডাকাতি ও বিভিন্ন মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। এসব এলাকার থানায় তাদের নামে একাধিক ডাকাতি ও মাদক বিক্রির অভিযোগে মামলা রয়েছে। সোর্সের মাধ্যমে পাওয়া গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অবস্থান নিশ্চিত হয়ে শুক্রবার বিকেলে (২১ জুলাই) অভিযান চালিয়ে জিঞ্জিরাম নদী থেকে অস্ত্র ও মাদকসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদে তারা ডাকাতি ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িত থাকার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং ৩৮৩৯, তারিখ- ২৪ জুলাই ২০১৭ইং। এদিকে তাদের গ্রেফতারের সংবাদে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের স্থানীয় লোকজন স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, এরেন্ডাবাড়ী এলাকায় কতিপয় অস্ত্রধারী ডাকাতের ভয়ে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছিল। গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ও বাহিরে ডাকাতিসহ নানা অপরাধ মুলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার পরও ধরা ছোয়ার বাহিরে ছিল। এসব ডাকাত সব-সময় অস্ত্রসহ চলাফেরা করতো। দুধর্ষ ডাকাত আব্দুল করিম সহ তাদের সহযোগিরা অত্যন্ত চালাক প্রকৃতির লোক। দিন দিন তারা এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। তাদের ভয়ে নৌ-পথে যাতায়াত করা ছিল দুঃসাধ্য। এলাকায় মাদক ব্যবসা সহ নৌ-ডাকাতি তাদের নেতৃত্বে সংঘঠিত হতো। তাদের ভয়ে আতংকিত থাকতো এলাকার অধিকাংশ মানুষ। তারা পুলিশী গ্রেফতার এড়াতে বাড়িতে নিয়মিত অবস্থান করতো না। তারা ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ায় এলাকার মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছে। জনমনে আতঙ্ক অনেকটাই কমে গেছে।
ফুলছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু হায়দার মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, গ্রেফতারকৃতরা ফুলছড়ি থানার একাধিক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাসহ এলাকায় নানা ধরণের অভিযোগ রয়েছে। কয়েক দফা অভিযান চালিয়েও তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। ফুলছড়ি থানার এসব মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো প্রক্রিয়া চলছে বলে তিনি জানান।