এটিএম আফছার আলী, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩০ হাজার পরিবার। ২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ পড়েছে।
সোমবার দিবাগত রাত হতে পানি ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, কাপাসিয়া, শ্রীপুর ও শান্তিরাম ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। যে হারে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে করে আগামী ৬ ঘণ্টার মধ্যে তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। সাতটি ইউনিয়নের কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে পানিবন্দি পরিবারগুলো আশ্রয় কেন্দ্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উঁচু স্থান এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেরি বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। বিশেষ করে বদ্ধ-বৃদ্ধা, শিশু, প্রসূতি এবং গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে পানিবন্দি পরিবারগুলো। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ফিরে দেখা গেছে, পানিবন্দি পরিবারের অনেক সদস্যরাই ঘরের চালে এবং টুইয়ের মধ্যে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। কাপাসিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন জানান তার ইউনিয়নের আটটি ওয়ার্ড পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি পরিবারদের আশ্রয় দেয়ার মত কোন ঠাঁই নেই। অত্যান্ত মানবেতর জীবন-যাপন করছে পরিবারগুলো। তিনি আর বলেন বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তার ইউনিয়নের ৬টি ওয়ার্ডের চরাঞ্চলের পরিবারদের ঘর-বাড়ি সম্পূর্ণরুপে ডুবে গেছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মীর শামছুল আলম জানান, বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম সম্পূর্ণরুপে বন্ধ হয়ে গেছে। বাকী ১৩টি প্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম আংশিকভাবে চলছে।
উপজেলার নির্বাহী অফিসার এস.এম. গোলাম কিবরিয়া জানান, সরকারিভাবে এপর্যন্ত ২০ মেট্রিক টন চাল এবং দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পানিবন্দি পরিবারদের মাঝে তা বিরতণ করা হবে।