খবরবাড়ি ডেস্কঃ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গাইবান্ধা অঞ্চলের অন্যতম ত্যাগী নেতা জনপ্রিয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাদী আর নেই।
উপজেলা চার দলীয় ঐক্যজোট আহবায়ক আব্দুল হাদী সরকার মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদরের উদয়সাগর গ্রামের নিজ বাড়ীতে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
পলাশবাড়ী থানা বিএনপি’র পুরোধা প্রাণ স্বাধীনচেতা নম্র-ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের আব্দুল হাদী শয়ন ঘর থেকে বেরুতে গিয়ে মাটিতে পড়ে যান। এ সময় আকস্মিক হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান। উপজেলা সদরের উদয়সাগর গ্রামের সম্ভ্রান্ত পরিবারের মৃত নিজাম উদ্দিনের ৬ ছেলে ৪ মেয়ের মধ্যে আব্দুল হাদী’ই ছিলেন সবার বড় সন্তান। ডায়াবেটিসের পাশাপাশি সম্প্রতি তিনি প্যারালাইস্টে আক্রান্ত হন। নানা চিকিৎসায় এক পর্যায় তিনি পূনরায় অনেকটা সুস্থ্য হয়ে উঠেন।
মৃত্যুকালে তিনি বৃদ্ধা মা, এক ছেলে মিথুন (৩০) ব্যবসায়ী অপর ছেলে মিল্টন (২৫) পেশায় একজন টেক্সটাইল ফ্যাশন ডিজাইনার।
ছোট্ট দুই নাতি-নাতনির মা বাক প্রতিবন্ধি একমাত্র মেয়ে মুন্নি (২৮), আত্মীয়-স্বজন,পাড়া-প্রতিবেশি, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সকল শ্রেণী পেশার সহযোদ্ধা-সহকর্মি ও শুভাকাঙ্খিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
সদরের ঐতিহ্যবাহী এস.এম মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি ও মহিলা ডিগ্রীী কলেজ পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আব্দুল হাদীর আকস্মিক মৃত্যুর খবর জানাজানি হয়ে পড়ায় এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে।
প্রবীণ একজন ভালো মনের সরল প্রকৃতির সাদা-মাঠা মনের প্রিয় মানুষটিকে শেষবারের মত একনজর দেখতে শুভাকাঙ্খিরা তার বাড়ীতে ভিঁড় জমান। বুধবার বাদ যোহর এস.এম হাইস্কুল মাঠে নামাজে-জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন সম্পন্ন করা হবে।
রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবি অঙ্গনের সাংগঠনিক চড়াই-উৎরাই ও সংগ্রাম-যুদ্ধের মুখোমুখি বিএনপি নেতা আব্দুল হাদী ছিলেন স্বাভাবিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত। পরোপকারি প্রকৃতির মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনাসহ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বিভিন্ন মহল পৃথক-পৃথক বিবৃতি দিয়েছেন। জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র রাজনৈতিক আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমানের নেতৃত্বে জিয়াউর রহমানের হাতে-হাত রেখে বিগত ১৯৭৮ সালে জাতীয়তাবাদী যুবদল পলাশবাড়ী থানা শাখার সভাপতি পদে মনোনীত হওয়ার মধ্য দিয়ে তিনি বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করেন।
সে সময় যুবদলের সেক্রেটারি ছিলেন উপজেলা বিএনপি’র বর্তমান সভাপতি মো.শাহ আলম সরকার। উপজেলার বেতকাপা ইউপি’র চেয়ারম্যান মরহুম এটিএম শামছুল আলম বাদশা ছিলেন থানা বিএনপি’র বলিষ্ট সভাপতি। রাজনৈতিক উৎকর্ষতার ধারাবাহিকতায় ১৯৮৩ সালে তিনি থানা বিএনপি’র সভাপতি নির্বাচিত হন। এ সময় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মো.শাহ আলম সরকার।
গাইবান্ধা জেলা বিএনপির অন্যতম নেতা আব্দুল হাদী মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত পলাশবাড়ী উপজেলা বিএনপির সম্মানিত সিনিয়র উপদেষ্টা ছিলেন। এ খবর জানার পর-পরই বন্ধুবর শুভাকাঙ্খি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু বকর প্রধান তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আব্দুল হাদীকে দেখার জন্য রাতেই ছুঁটে আসেন তার বাসায়।
তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনাসহ শোকাবিভূত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে যারা বিবৃতি দিয়েছেন তাঁরা হলেন গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি পলাশবাড়ী-সাদুল্লাপুর নির্বাচনী এলাকার ২০ দলীয় জোটের সম্ভাব্য অন্যতম মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক ডা. মইনুল হাসান সাদিক ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল নবী টিটুল ছাড়াও জেলা ও উপজেলা বিএনপিসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।