গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ কৃষি ভান্ডার হিসেবে খ্যাত গাইবান্ধা জেলা। এ জেলার ৭ উপজেলার প্রত্যান্ত পল্লী অঞ্চলের উঁচু এলাকায় খাদ্য নিরাপত্তার বিধানে সম্প্রতি আমন চারা রোপনে চরম ব্যস্ত সময় পাড় করছে। কৃষকরা বীজতলা থেকে আমনের চারা তুলে সেই গুঁছিয়ে দিচ্ছেন কাঁদামাখা জমির বুকে, চার মাস পর সেই চারাই সভা পাবে থোকা থোকা ধানের শীষ।
এক সময় শীষের প্রতিটি খোলসের পেটভরে জন্ম নেবে দানা সেই দানার ভারে সোনালী শীষ অবনত হয়ে প্রণতি জানাবে কর্মনিষ্ঠ ভূমিকুটুম্ব কৃষকে আর কৃষকের কল্যাণে দেশের খাদ্য ভান্ডারে লক্ষ লক্ষ টন ধান দেশ স্বনির্ভর হবে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য।
বৃহস্পতিবার গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা বি-আর ২৮ ও ১১ ধান জাতের চারা রোপণ করছেন। কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন এ বছর বিঘা প্রতি খরচ হচ্ছে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। সেচ না লাগায় এমন খরচ অবশ্য রোপা আমনে সেচ লাগে না বলে চলে অতীতে গরুর লাঙ্গন দিয়ে চাষ চললেও বর্তমানে এর ব্যবহার নেয় বলে চলে।
সাদুল্যাপুরের কৃষক জহির উদ্দিন এক বিঘা জমির রোপনের জন্য চাষ দিতে হচ্ছে ৩ থেকে ৪টি করে এজন্য বিঘা প্রতি এবার খরচ হয়েছে ৫-৬ হাজার টাকা। কৃষক জামাত আলী জানান, ধান রোপণ চাষাবাদের জন্য এক বিঘা জমিতে সার প্রয়োগ করতে হয় ২০ কেজি ডিএপি, ১০ কেজি পটাস ৫ কেজি জিপসাম ইউরিয়া সার তো আছেই। ধীরগঞ্জ এলাকাদের বলেন এ মৌসুমে আমন রোপন করতে কৃষকদের শেষ দিতে হয়।
গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন এলাকায় আমন আমন মৌসুম শুরু হওয়ার ফলে শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। এ সংকটের কারণে অনেকে সকল প্রস্তুতি নিলেও আমন রোপন করতে পারছে না কৃষকরা ফসলের মাঠ প্রস্তুত ও আমন ধানের চারা লাগানো নিয়ে বর্তমান ব্যস্ত সময় পার করছে।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি জানিয়েছে, চলিত আমন মৌসুমে জেলার ৭ উপজেলায় ১ লক্ষ ১২ হাজার ৬০৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫ ভাগ জমি রোপন করা হয়েছে। বাকি সময়ের মধ্যে এ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে।
সাদুল্যাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ মোঃ ফজলে এলাহী জানান , কাঁদামাটিতে আমনের চারা রোপন করতে গেলে জমিতে চাষ দেওয়ার জন্য পানি থাকতে হয়। কখনো কখনো বৃষ্টি বা বর্ষার পানির সংকট দেখা দিলে কৃত্রিম সেচ বা সম্পূরক সেচ দিয়ে জমি চাষ করতে হয় কিন্তু এ বছরে আবহাওয়া রোপন আমলের জন্য বেশ উপযোগী। দফায় দফায় বৃষ্টির কারণে সকল জমিতেই কৃষক কোন রকম সেচ ছাড়াই চাষ দিয়ে চারা রোপন করতে পারছেন। ফলে আশা করা যাচ্ছে তাতে প্রতিটি এলাকাতেই আমনের বেশ ভালো ফসল হতে পারে।