বিশ্বের ৬৩টি দেশকে পেছনে ফেলে সেরার শিরোপা অর্জন করেছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারর ‘কন্যাশ্রী প্রকল্প’ ৫৫২টি নাগরিক পরিষেবার মধ্যে শ্রেষ্ঠ সমগ্র বিশ্বে। এই প্রকল্প এবং এই প্রকল্পের জন্য জাতিসংঘের দেয়া সম্মানকে কটাক্ষ করলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প ‘কন্যাশ্রী’ চালু হয়েছিল ২০১৩ সালে। রাজ্য সরকারের সব থেকে জনপ্রিয় এই প্রকল্পটি কন্যা সন্তানদের লেখাপড়ায় উৎসাহিত করতে চালু হয়৷ কন্যাশ্রীর জন্য ইউনিসেফ আগেই রাজ্যকে পুরস্কৃত করে৷ এরপর ফের সেরার শিরোপা রাজ্যের মুকুটে৷ কিন্তু রাজ্যে মহিলাদের সার্বিক উন্নতি কিছুই হয়নি। এখন অনেক পিছিয়ে রয়েছে রাজ্যের সব স্তরের মহিলারা। এমনই মনে করেন বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
২৩ মে শুক্রবার রাতের দিকে নেদারল্যান্ডের দ্য হেগ শহরে জাতিসংঘের তরফ থেকে পুরষ্কার দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বাংলার প্রশাসনিক প্রধানের এই সাফল্যে আলোড়ন উঠেছে সারা দেশ জুড়ে। এই নিয়ে ২৪ মে শনিবার সকালে ফেসবুকের ওয়ালে নিজের মন্তব্য প্রকাশ করেছেন তসলিমা নাসরিন।
তসলিমা নাসরিন এর ফেসবুকের স্ক্রিনশট
তসলিমা নাসরিন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘রাষ্ট্রপুঞ্জ মমতা বন্দোপাধ্যায়কে রাজ্যের কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য পুরস্কৃত করেছে। চমৎকার! কন্যাদের শ্রী দেখতে চাইলে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বেশ্যালয় কলকাতার সোনাগাছি ঘুরে আসুন, ঘুরে আসুন কালীঘাট, বউবাজার, খিদিরপুর, লেবুতলার বেশ্যালয়, কন্যারা কী করে পূতিগন্ধময় নিকৃষ্ট পরিবেশে যৌনদাসীর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে দেখে আসুন।’
‘কী করে কন্যাশিশু পাচার হচ্ছে, বিক্রি হয়ে যাচ্ছে পতিতালয়গুলোতে প্রতিদিন, দেখে আসুন। কন্যারা শুধু ধর্ষণের নয়, গণধর্ষণের শিকার হচ্ছে। রাস্তা ঘাটে অলিতে গলিতে কন্যাদের যৌন হেনস্থা দিন দিন বাড়ছে। ঘরের ভেতর শত শত কন্যা প্রতিদিন স্বামী-শ্বশুরবাড়ির নির্যাতন সইছে দেখে আসুন’, স্ট্যাটাসে লেখেন তিনি।
তসলিমা আরও যোগ করেন, ‘লেখাপড়া জানা কন্যারাও নির্যাতন অসহ্য হয়ে উঠলে আত্মহত্যা করছে, চলুন দেখে আসি কত শত কন্যাকে পণপ্রথার শিকার হতে হচ্ছে, বধূহত্যার হারই বা কেমন বাড়ছে দেখে আসি। বাল্যবিবাহের শিকার কত লক্ষ কন্যা, দেখে আসি চলুন। কী বলছি কী! আমি কী করে দেখব, আমার তো পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ নিষেধ! কারণ আমি যে মস্ত বড় এক অপরাধ করেছি! কন্যাদের সমানাধিকার চেয়ে দু’ডজন বই লিখেছি!!’