সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে হাতকড়াসহ পুলিশের কাছ থেকে পালানোর সময় ট্রাক ধাক্কায় রিপন চন্দ্র দাশ (২২) নামে অপহরণ মামলার আসামীর মৃত্যুর ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজু আহম্মেদসহ ৪ পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর)- খায়রুল আলম। তিনি জানান, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে একজন এসআই ও ৪ পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন নারী কনস্টেবল রয়েছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। ক্লোজড হওয়া অপর পুলিশ সদস্যরা হলেন কনস্টেবল শাহানুর রহমান, মোস্তাফিজার রহমান ও নার্গিস বেগম।
উল্লেখ্য, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামের বাবলু চন্দ্র দাশের ছেলে রিপন চন্দ্র দাশ একই গ্রামের সুরেশ চন্দ্র দাশের স্কুল পড়ুয়া কন্যাকে গত ২৯ মে সকালে অপহরণ করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় চম্পার বাবা সুন্দরগঞ্জ থানায় অপহরণ মামলা করেন। পরে ১ জুন অভিযান চালিয়ে বগুড়ার কাহালু পৌর শহরের টাইকপাড়ার গঙ্গারাম দাশের বাসা থেকে স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার ও রিপনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদেরকে একই মাইক্রোতে করে সুন্দরগঞ্জ আনার পথে রিপন প্রসাব করার কথা বলে। পলাশবাড়ীর জুনদহ বাজার এলাকায় রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে রিপনকে মাইক্রোবাস থেকে নামায়। রিপন প্রসাব করা শেষে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে দ্রুতগামী ট্রাকের ধাক্কায় তার মৃত্যু হয় বলে পুলিশ ও সুরেশের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয়।
এদিকে, এ ঘটনার পর শুক্রবার দুপুরে রিপনের পরিবার ও এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে সুরেশের বাড়া-ঘর ভাঙচুর ও তার ভগ্নিপতির দোকানে অগ্নিসংযোগ করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। সেই থেকে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ অবস্থান করছেন।
অপরদিকে, রিপনের পরিবারের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে তাকে ট্রাক চাপায় হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু বিচারসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় রিপনের লাশ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে গত ১ জুন রাত থেকে ২ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত রিপনের লাশ সদর হাসপাতাল মর্গে পড়ে থাকে।
তবে রিপনের বাড়িতে থাকা সুন্দরগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার মামুনুর রহমান মামুন জানান, আলোচনার মাধ্যমে লাশ গ্রহণে সম্মতি জানায় রিপনের পরিবার। রাতেই রিপনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।