
ঈদে ছবিমুক্তি মানেই ব্যবসায়িক সাফল্যের সম্ভাবনা । কারণ একশ্রেণির দর্শক এখনও ঈদে ছবি দেখতে সিনেমা হলে ভিড় জমায়। তাই নির্মাতারা চান ছবির বাণিজ্যিক সাফল্য নিশ্চিতে ঈদে ছবি মুক্তি দিতে।
এবার ঈদের মাত্র দুই দিন আগে ঈদের মুক্তির জন্য তিনটি ছবি চুড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে নবাব,ও বস ২ যৌধ প্রযোজনার।নবাব ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে আছেন কলকাতার নায়িকা শুভশ্রী। বস ২-তে জিৎ, শুভশ্রী ও ফারিয়া এবং রাজনীতি ছবিতে অভিনয় করেছেন শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস।
বছরের সেরা ছবিগুলোই সচরাচর ঈদে মুক্তি দেওয়া হয়।সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাণিজ্য সফল ছবি বাছতে গেলে ঈদের ছবি চলে আসবেই। গত দুই যুগেও এমন অসংখ্য দর্শকপ্রিয় ছবি হয়েছে ঈদুল ফিতরে। তার মধ্য থেকে দশটি ছবি তুলে ধরা হলো-
কেয়ামত থেকে কেয়ামত
বোম্বের ব্লুক বাস্টার ‘কেয়ামত সে কেয়ামত থেকে’র কপিরাইট এনে তরুণ পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান নির্মাণ করেন ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। আনন্দমেলা সিনেমা লিমিটেডের বড় বাজেটের ছবিটিতে আত্মপ্রকাশ করেন সালমান শাহ ও মৌসুমী। ১৯৯৩ সালের অন্যতম সেরা ছবি তো বটেই, নব্বই দশকের অন্যতম জনপ্রিয় ছবি হয়ে উঠে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’।
দেনমোহর
শফি বিক্রমপুরী পরিচালিত ছবিটি সালমান-মৌসুমী জুটির শেষ ছবি। এই জুটি অভিনীত প্রতিটি ছবি সুপারহিট। ‘দেনমোহর’ কপিরাইট নিয়ে বানানো ছবি। দুই পরিবারের বিরোধের গল্প নিয়ে নির্মিত ছবিটি ১৯৯৫ সালের ঈদুল ফিতরে মুক্তি পায়। ঈদের ছবিগুলোর মধ্যে সর্বাধিক ব্যবসা করে এটি। বছরের অন্যতম হিট ছবি বলে রায় পায় শ্রুতিমধুর গানের ছবিটি।
স্বামী কেন আসামি
১৯৯৭ সালের ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়ে বছরের সর্বোচ্চ ব্যবসা সফল ছবির তালিকায় উঠে আসে ‘স্বামী কেন আসামি’। মনোয়ার খোকন পরিচালিত এ ছবির শিল্পী তালিকায় আছেন জসীম, শাবানা, ঋতুপর্ণা, চাঙ্কি পান্ডে এবং আহমেদ শরীফ। শাবানার নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় এটি নির্মাণ করে। তবে সেবার ভারতের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় এস এস প্রডাকশন্স শামিল হয়।
হঠাৎ বৃষ্টি
১৯৯৯ সালের ঈদুল ফিতরে বিটিভিতে প্রিমিয়ার হলে ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। পরে সিনেমা হলে মুক্তি পেলেও ছবিটি সাড়া পায়। বাসু চ্যাটার্জি পরিচালিত এ ছবিতে একজন তারকার জন্ম হয়। ফেরদৌস সারাদেশে পরিচিতি পান ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ হিট হলে। যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ছবিটিতে ফেরদৌসের বিপরীতে অভিনয় করেন প্রিয়াংকা ত্রিবেদী।
বিয়ের ফুল
রিয়াজ-শাবনূর-শাকিল খান অভিনীত ‘বিয়ের ফুল’ ১৯৯৯ সালের ঈদুল ফিতরের ছবি। বলিউডের ‘দিওয়ানা’ ছবির গল্প নিয়ে এটি পরিচালনা করেন মতিন রহমান। ছবিটি সুপারহিট ব্যবসা করে। পাশাপাশি ছবির গানগুলো অত্যন্ত শ্রোতাপ্রিয়তা পায়। রিয়াজ-শাবনূর জুটির অন্যতম আলোচিত ছবিটি ঈদের অনেক ছবির ভিড়ে ভালো জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়।
ব্যাচেলর
টিভি-সিনেমা মিলিয়ে ডজনখানেক তারকা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর প্রথম ছবিতে অভিনয় করেন। ‘ব্যাচেলর’ ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয় ইমপ্রেস টেলিফিল্মের চ্যানেল আইতে। পরে বলাকা কলে মুক্তি পেয়ে কয়েক মাস ধরে চলে। ছবির গানগুলো তরুণ দর্শক-শ্রোতাদের ঘরে ঘরে ঠাঁই করে নেয়। এতে অভিনয় করে অপি করিম ২০০৩ সালে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জাতীয় পুরস্কার পান।
শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ
দীলিপ বিশ্বাসের ছেলে দেবাশীষ বিশ্বাসের পরিচালনায় অভিষেক ঘটে ২০০১ সালের এই সুপারহিট ছবিতে। রিয়াজের অভিনয় সমৃদ্ধ এ ছবিতে তার বিপরীতে থাকেন শাবনূর। এ জুটির অন্যতম সেরা ছবি বলে বিবেচিত ‘শশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’। অনেক ছবির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে নির্মাণকুশলার গুণে ছবিটি শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করে ঈদ উৎসবে। মহিলা দর্শকরা এটিকে সাদরে গ্রহণ করেন।
এক টাকার বউ
এই প্রথম শাকিব খানের প্রথম ছবি যেটি প্রচণ্ড ঢাকঢোল পিটিয়ে ঈদুল ফিতরে মুক্তি পায়। এ ছবিতে শাকিব খান বেশি পারিশ্রমিক নিয়ে আলোচিত হন। মূলত শাকিব-শাবনূর জুটির ‘আমার প্রাণের স্বামী’র ছবির সফলতার ধারাবাহিকতায় ‘এক টাকার বউ’ নির্মাণ করা হয়। শিশুশিল্পী দীঘি অভিনীত ছবিটি মুক্তির আগেই আলোচনার টেবিলে বাম্পার হিট হয়ে যায়!
নাম্বার ওয়ান শাকিব খান
২০১০ সালের ঈদুল ফিতরের সেরা ছবি ‘নাম্বার ওয়ান শাকিব খান’। মোহাম্মদ হোসেনের অন্যান্য ছবির মতো এটির শুটিং হয় থাইল্যান্ডে। নাম্বার ওয়ান কথাটির সঙ্গে শাকিব খানের পরিচয় এ ছবি থেকেই। অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন শাকিবের বিপরীতে। ধামাকাদার-মশালা ছবি হিসেবে ‘নাম্বার ওয়ান শাকিব খান’কে দর্শকরা বেশ ভালো নাম্বার প্রদান করেন।
হিরো দ্য সুপারস্টার
চিত্রনায়ক শাকিব খান তার প্রথম প্রযোজিত ছবিটির মুক্তির জন্য বেছে নেন ২০১৪ সালের ঈদুল ফিতরকে। অপু ও ববি এই নায়িকার বিপরীতে অভিনয় করেন শাকিব। তার প্রিয় পরিচালক বদিউল আলম খোকন বড় বাজেটের এই ছবিটি নির্দেশনা দেন। দর্শকপ্রিয়তা পেলেও বড় রকমের মুনাফার মুখ দেখতে পাননি শাকিব। এজন্য মন্দা ব্যবসায়িক অবস্থাই দায়ী।