এটিএম আফছার আলী, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার আর ক’দিন পর বন্যা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আগাম প্রস্তুতি হিসেবে তিস্তা পাড়ের নৌ-শ্রমিকরা নৌকা মেরামতের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। প্রতি বছর ৪ হতে ৫ মাস বন্যার পানিতে নৌকা চালিয়ে রুজি-রোজগার করে ভালোভাবে সংসার পরিচালনা করতে কোন সমস্যা হয় না নৌ-শ্রমিকদের। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তারপাড়ের নৌ-শ্রমিকরা ইতিমধ্যে বন্যার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে নৌকা মেরামত করছেন জোরে-সোরে। নৌকা মেরামতে উপকরণ ও মিস্ত্রী সংকটের কারণে সব সময় মেরামত করা সম্ভাব হয় না। তাছাড়া উপকরণের দামও অনেক বেশি। উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত রাক্ষুসি তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রতি বছর বন্যা এলে নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পরে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নৌ-শ্রমিকরা ৬টি ইউনিয়নের ৪০টি গ্রামের সাধারণ মানুষদের নৌকা যোগে নিয়ে যাওয়া আসা করে থাকে। পাশাপাশি পাশর্^বতী কুড়িগ্রামের উলিপুর, চিলমারি থানার হাট উপজেলার সাথে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার যোগাযোগ রক্ষার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নৌকা। দিন-রাত ২৪ ঘন্টা নৌ-শ্রমিকরা মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকেন। কথা হয় বেলকা ইউনিয়নের নৌ-শ্রমিক জয়ন্ত কুমারের সাথে। তিনি জানান- তিস্তার নাব্যতা কমে যাওয়ায় অনেক নৌ-শ্রমিক এখন বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন। হাতে গোনা কয়েকজন নৌ-শ্রমিকরা বিশেষ করে বন্যার সময় নৌকা চালিয়ে সংসার পরিচালনা করে থাকেন। বাকি সময় অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত থাকেন। বেলকা ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ জানান- নৌ-শ্রমিকদের এখন আর নৌকা চালাতে দেখা যায় না। তারা অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন। উজান থেকে নেমে আসা পলি জমে গভীর তিস্তা নদী এখন খালে পরিনিত হয়েছে। শুধু বন্যার সময় নিচু এলাকাসমূহ প্লাবিত হয়ে পড়ে। ঠিক সেই সময় গুটি কয়েকজন নৌ-শ্রমিককে নৌকা চালাতে দেখা যায়। নৌ-শ্রমিকদের বাঁচাতে তিস্তা নদী ড্রেজিং ও খনন করা একান্ত প্রয়োজন। উপজেলা মৎস্য অফিসার আইরিন আসাদ জানান-ইতিমধ্যে জেলে ও নৌ-শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করে তাদেরকে আইডি কার্ড দেয়া হয়েছে। এ কার্ডের মাধ্যমে তারা প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।