খবরবাড়ি ডেস্কঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার ক্রীড়া সংগঠনগুলো বর্তমানে বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। অদ্যাবধি উপজেলায় কোন ষ্টেডিয়াম গড়ে না ওঠায় তরুণ ও যুব খেলোয়ারদের একমাত্র ভরসা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ। সেসব মাঠও দিন দিন খেলোয়াড়বিহীন হয়ে পড়েছে। কয়েক বছর আগেও বিভিন্ন মৌসুমে উপজেলার গ্রামাঞ্চলে ফুটবল-হা-ডু-ডু, দাড়িয়াবান্ধা-ভলিবল ও ক্রিকেটসহ অন্যান্য সকল গ্রামীণ খেলায় সাজ-সাজ রব পড়ে যেত। এখন তেমন কোন আয়োজন আর চোখে পড়ে না। সরকারী স্কুল পর্যায়ের যেসব খেলাধুলার আয়োজন করা হয়ে থাকে কেবল সেসব খেলাই শুধু চোখে পড়ে। গ্রামীণ ওইসব খেলার আয়োজনে সরকারী ভাবে তেমন কোন উদ্যোগ বা ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে না। ফলে; এলাকার শিশু-কিশোর ও তরুণদের শারীরিক এবং মানষিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, জেলা-উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা গুলোর দায়িত্বশীলদের খেলোয়ারদের প্রতি উৎসাহ প্রদান এবং অর্থনৈতিক সংকটের কারণেই ক্রীড়া সংগঠনগুলো ক্রমান্বয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন খেলায় এলাকার চিহ্নিত খেলোয়াররা খেলার জগৎ থেকে ক্রমান্বয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে নেশার সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। কেউ কেউ আবার বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। নাম না প্রকাশে শর্তে এমনি কয়েকজন ফুটবল খেলোয়ারদের সাথে কথা বললে তারা জানান, আগে আমরা নিয়মিত ফুটবল খেলতাম। বিভিন্ন টিমের হয়ে নানা স্থানে খেলে আসতাম।
সবাই এক নামে আমাদের চিনত। খুব ভাল লাগতো সে সময় গুলো। একটি রুটিনের মধ্যে বাধা ছিল আমাদের ফেলে আসা সেই সোনালী দিনগুলো। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা এক সময়ের ক্যারাম-দাবা, ব্যাটমিন্টন-হা-ডু-ডু, ভলিবল, ফুটবল ও ক্রিকেট সংগঠনগুলো ইতিমধ্যে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে পড়ছে।
পলাশবাড়ী উপজেলার ক্রীড়া সংস্থাসহ গ্রামাগঞ্জের পাড়া-মহল্লার ক্লাবগুলোর অস্তিত্ব দিন দিন ঝিমিয়ে পড়ছে। ওইসব ক্লাব প্রধানরা জানান, ক্রিকেট একটি ব্যয়বহুল খেলা। আর খেলার ব্যয় ব্যক্তিগত ভাবে সামলাতে না পেরেই আমাদেরকে খেলার মাঠ ছাড়তে হয়েছে। এদিকে বিভিন্ন ক্রীড়া খেলোয়াররা জানান, প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির অভাবে তাদের খেলাধুলায় বিঘœ ঘটছে। তারাও বড়মাপের খেলোয়ার হতে চান। কিন্তু মফস্বল পর্যায়ে সীমাহীন সীমাবন্ধতার কারণে তারা অনেক পিছিয়ে আছে। প্রয়োনজীয় সুযোগ-সুবিধার অভাবে গ্রামের অনেক প্রতিভাবান খেলোয়ার জ্বলে ওঠার আগেই নিভে যাচ্ছে। এক কথায় জাতীয় পর্যায়ের কোন সুযোগ-সুবিধা গ্রামের খেলোয়াররা ভোগ করতে পাচ্ছে না। অন্যদিকে উপজেলা পরিষদ থেকেও খেলোয়ারদেরকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। ফলে এলাকার শিশু-কিশোর, তরুণ-যুবদের প্রতিভা বিকাশের পথ একেবারে রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে।