কেউ হয়তো অপ্রয়োজনীয় মনে করে ফেলে দিচ্ছেন ডাস্টবিনে। আবার সেই জিনিসকেই সম্বল করে হয়তো জীবনধারণ করছে কেউ। এমনই একজন মানুষ কলম্বিয়ার হোসে আলবার্তো গুতিয়েরেজ। ডাস্টবিনের আবর্জনা পরিস্কার করতে গিয়ে বিশ বছর আগে তার হাতে পড়ে টলস্টয়ের সেই বিখ্যাত উপন্যাস ‘আন্না কারেনিনা’। ওই উপন্যাসই বদলে দিয়েছে গুতিয়েরেজের জীবন।
নাহ, রাতারাতিই বদলে যায়নি। গত বিশ বছর ধরে আবর্জনা পরিস্কারের কাজে নিয়োজিত থাকলেও জীবনের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টেছে আমূল। নিজের বাড়িতেই বিশ হাজার বইয়ের একটি পাঠাগার তৈরি করেছেন গুতিয়েরেজ এবং তার স্ত্রী।
এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যখন বুঝতে পারলাম, আশপাশের মানুষ বই ফেলে দিতে শুরু করেছে, আমি সেগুলো ঘরে নিয়ে আসতাম।’ যেসব পরিবার তাদের সন্তানের জন্য বই কিনতে পারেন না, তাদের নিজের সংগ্রহের বই দিয়ে সহায়তা করেন গুতিয়েরেজ। কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতার দরিদ্র অঞ্চলে, কিংবা আশেপাশে লাইব্রেরি নেই- এমন অঞ্চলে বই জোগান দেয় গুতিয়েরেজ দম্পতির এই অমূল্য সম্ভার।
‘বইয়ের সম্রাট’ হিসেবেই স্থানীয় মানুষের কাছে বেশি জনপ্রিয় গুতিয়েরেজ। তিনি আরও বলেন, ‘অন্যদের যত বই পড়তে দিই, তার থেকে অনেক বেশি বই আমার কাছে আসে।’ ইদানিং অনেকেই স্বেচ্ছায় তার পাঠাগারে বই দান করছেন। কালো অক্ষরের যে বিপুল ক্ষমতা, তার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ছে মানুষের- এতেই গুতিয়েরেজের আনন্দ।
এত বই রাখার জায়গা নেই তার পাঠাগারে। নতুন বই আসায় শিশুদের বই পড়ার আসরে সাময়িক ভাটা পড়েছে। খুব শিগগিই অন্য কোনো ব্যবস্থা নিশ্চয়ই হবে বলেও জানান তিনি।
কলম্বিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠি রেভুলেশনারি আর্মড ফোর্সেস অব কলম্বিয়ার (ফার্ক) সৈন্যরা অস্ত্র ছেড়ে ফিরতে চাইছে জীবনের মূল ধারায়। তাদের অনেকেই যোগাযোগ করছেন গুতিয়েরেজ ও তার স্ত্রী মেরির সঙ্গে। পড়াশোনা শিখে চাকরি করতে চাইছে তারা।