খবরবাড়ি ডেস্কঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে থানা পুলিশের নেতৃত্বে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে সাধারণ পথচারিসহ ঘরমুখো মানুষদের নির্বিঘ্নে ঘরে ফিরতে নানামুখি নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।
এরই অংশ হিসেবে কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের পলাশবাড়ী-কাশিয়াবাড়ী ৮কি.মি. সড়কের পৃথক দু’টি স্পর্শকাতর অপরাধজনিত পয়েন্টে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে অস্হায়ী নিরাপত্তা পয়েন্ট
স্হাপন করা হয়েছে।
পলাশবাড়ী থানা পুলিশের উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম রিন্টুর সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রত্যহ সন্ধা হতে ভোর পর্যন্ত রাতভর অব্যাহত নিরাপত্তা প্রহরা চলছে। চিহৃিত ওই পয়েন্টেসহ আশেপাশে প্রায় প্রতি রাতেই যেখানে ছিনতাই-ডাকাতিসহ ছোট-বড় নানা অপরাধ অব্যাহত সংঘটিত হয়ে আসছিল।এমন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্হা সৃষ্টির কারনে গত কয়েকদিনে সেখানে একটি অপরাধও সংঘটিত হয়নি বলে জানা যায়।
তবে; চরম দুঃখ পরিতাপের বিষয় হচ্ছে; জনস্বার্থে পয়েন্ট দু’টিতে গ্রাম পুলিশ ও স্হানীয়দের সমন্বয়ে গঠিত টীমের অন্তর্ভূক্ত সদস্য হয়ে যারা সার্বক্ষনিক নির্ঘুম নৈশকালীন নিরাপত্তার দায়ীত্ব পালন করছেন তাদের নেই কোন অর্থের সংস্হান। যা সম্পূর্ণ অমানবিক। নিজের খেয়ে রাতভর সম্ভাব্য অপরাধ সমূহ রোধের মাধ্যমে যারা মানুষের জান-মাল রক্ষাসহ উপজেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্হিতি রাখছেন স্বাভাবিক। ভাবতেও অবাক লাগে বিনিময়ে কেউই তাদের করছেনা পৃষ্টপোষকতা।এসড়কে একটু রাত গভীর হলেই চলন্ত বাস-মিনিবাস,মোটরবাইক, অটোচার্জার,রিকসা-ভ্যানের যাত্রী ও পথচারিদের নিকট সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র স্বর্বস্য ছিনিয়ে নেয়ার কবল থেকে করছে রক্ষা।সারারাত বিরামহীন নিরলস পরিশ্রমের বিনিময়ে অবশেষে কিছুই না পেয়ে ভোরবেলা বাড়ী ফিরছে একেবারে খালিহাতে। অপরদিকে; নির্ঘুম রাত যাপনের কারনে দিনের বেলায় অপর যে কোন কাজে সম্পৃক্ত হতে পারছেনা। ফলে;ভূক্তভোগিদের পরিবার-পরিজন নিয়ে নিদারুন কষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
দিনের পর দিন অর্ধাহারে-অনাহারে থাকায় তারা নিরাপত্তা কাজে স্বাভাবিক আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। স্বতঃস্ফুর্ত নিরুৎসাহীত হয়ে পড়ছেন দায়ীত্ব পালনে।রাতভর যাত্রীদের নিকট শুধু অর্থসহ মূল্যবান মালামাল ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনাই ঘটতো না। প্রত্যন্ত পল্লীর নির্জন সড়কটিতে মোটরবাইক,সিএনজি, অটোচার্জার ও বাইসাইকেল পর্যন্ত ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনাও মাঝেমধ্যেই ঘটে থাকে। নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিতরা জানান,কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সদস্য,গ্রাম পুলিশ ও স্হানীয় কতিপয় যুবকদের সমন্বয়ে নিরাপত্তা টীম গঠন করা হয়েছে। গঠিত টীম সদস্যরা খেয়ে না খেয়ে গত ১৮ জুন থেকে অব্যাহত দায়ীত্ব পালন করে চলেছেন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,সড়কটির গণেশপুর বাঁধের অদূরে কেশবপুর ব্রিজ নামক স্হানে গ্রাম পুলিশ লালমোহন,কৈলাস,স্বদেশ ও বিমল চন্দ্রের নেতৃত্বে ৮ জন এবং একই সড়কের বেঙ্গুলিয়া পয়েন্টে গ্রাম পুলিশ আল-আমিন ও জগদীশের নেতৃত্বে ৮ জনসহ ১৬ জন নিরাপত্তার দায়ীত্ব পালন করছেন। তারা সকলেই চরম দুঃখের সুরে বলেন ২৩ জুন শুক্রবার পর্যন্ত গত ৬ দিনে তাদের কেউই কিছু বিনিময় করেননি। যা সম্পূর্ণ অমানবিক। ভূক্তভোগিরা হতাশা মনে আরো বলেন, আমরা নিরুপায় হয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ-এর নিকট বিষয়টি অবগত করলেও আমার করার কিছুই নেই বলে তিনি সরাসরি জানিয়ে দেন। অপরদিকে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান রিন্টু মিয়া উদাসিনতার সহিত জানান বিষয়টি পরবর্তি সময় দেখা যাবে। নিরাপত্তার দায়ীত্বে নিয়োজিত গ্রাম পুলিশ,কমিউনিটি পুলিশ ছাড়াও এলাকার স্বতঃস্ফুর্ত অতি দরিদ্র-হতদরিদ্ররা আবেগপ্লুত হয়ে আক্ষেপের সুরে এ প্রতিনিধিকে তাদের নানা দুঃখ-কষ্টের কথা জানান। তারা বলেন ;কারো ঈদ আনন্দ নির্বিঘ্ন করতে নিজেদের ঈদ নিরানন্দে পরিনত হয়েছে।
এ অমানবিক বিষয়টি লাঘব করতে বঞ্চিত ভূক্তভোগিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লষ্ট দায়ীত্বশীল কর্তা ব্যাক্তিদের মানবিক হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।