
ইফতারের ফাঁকে খোশ গল্পে আবারো সরকার পতনের আন্দোলনে একজোট হয়ে রাজপথে নামা কথাই উঠে আসে নেতাদের মুখে। মুচকি হেসে খালেদা জিয়া বললেন, সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই পারে এই জুলুমবাজ সরকারকে হটিয়ে দেশে গণতান্ত্রিক ফিরিয়ে আনতে। এ ক্ষেত্রে বিএনপি তো প্রস্তুত, আপনারা চাইলেই আমরা ফের আন্দোলনে যাবো। কারণ সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠবে না।
সোমবার রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি (বসুন্ধরা) নবরাত্রি হলরুমে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের সময় এমন কথাই জানালেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
এ সময় বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক একিউ এম বদরুদ্দৌজা চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আসম আবদুর রবও একই সুরে কথা বলেন নেত্রীর সঙ্গে। সবমিলেই রাজনৈতিক নেতাদের কথা- সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করলেই ফের একজোট হয়ে তারা আন্দোলনে নামবেন।
খালেদা জিয়ার ইফতার অনুষ্ঠানে যেসব দলের নেতা অংশ নেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান (এলডিপি) ড. কর্নেল অলি আহমেদ, জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার বীর প্রতীক প্রমুখ।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটের দিকে খালেদা জিয়া নবরাত্রি হলে প্রবেশ করেন। এরপর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি নেত্রীকে নিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না ও আসম আবদুর রবের টেবিলের কাছে নিয়ে যান। এই দুই নেতার সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন খালেদা জিয়া। এ সময় তিনি এই দুই নেতার স্বাস্থ্যের খবর নেন এবং কুশলবিনিময় করেন।
এছাড়া আ স ম আবদুর রবের স্ত্রী তানিয়া রবের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন খালেদা জিয়া। তানিয়া রব ঢাকায় থাকেন কিনা, সে বিষয়েও জানতে চান ২০দলীয় জোটনেত্রী। এর কিছুক্ষণ পরই সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দৌজা চৌধুরী এসে যোগ দেন তাদের সঙ্গে। এই তিন নেতার সঙ্গে খালেদা জিয়া পুরো ১০ থেকে ১৫ মিনিট কথা বলেন।
আলোচনার এক পর্যায়ে মাহমুদুর রহমান মান্নার উদ্দেশে বি. চৌধুরী বলেন, ‘আপনাকে অভিনন্দন। আপনি নতুন দল করেছেন।’ এ সময় পাশে থাকা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও মান্নাকে অভিনন্দন জানান।
এরপর ইফতারের আগে সভামঞ্চে ওঠার আগে খালেদা জিয়া জামায়াতের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
মঞ্চে উঠেই ২০ দলীয় জোটের শরিক নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। জোটের শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমীকে উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘কেমন আছেন? আপনাকে তো দেখা যায় না।’
রাজনৈতিক নেতাদের সম্মানে খালেদা জিয়ার দেওয়া ইফতার মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী টিপু প্রমুখ। সবমিলেই সোমবারের ইফতার পার্টি রাজনৈতিক নেতাদের এক মিলন মেলায় পরিণত হয়। অনেক দিন পর একে অপরকে কাচে পেয়ে ভাব বিনিময় করেন।সূত্র-আরটিএনএন