
গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ চলতি ইরি-বোরো মওসুমে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মাঠপর্যায়ে ইরি-বোরো ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবারে কাঙ্খিত ফলন না হওয়ায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ বছরে বৈরী আবহাওয়ার বিরুপ প্রতিক্রিয়ার কারণে বোরো ধান ক্ষেতে নেকব্লস্ট রোগে ফসলহানি ঘটেছে। শুধু তায় নয়, এর সাথে যোগ হয়েছিল ভারি বর্ষন ও শিলাবৃষ্টি। ফলে জমির আধাপাকা ধান পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি ওই জমির ধান কাটতে অতিরিক্ত শ্রমিক ব্যবহার করতে হচ্ছে। এছাড়াও শ্রমিক সংকটে জমির ধান আরও ক্ষতিসাধন হচ্ছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে সরজমিনে সাদুল্যাপুর উপজেলার বড় জামালপুর এলাকার বোরো চাষি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমার ৫০ শতক জমিতে ধানের শীষ সাদা হয়েছিল। গতকাল ওই জমির ধান কাটা-মাড়াইয়ের পর মাত্র ৫ মণ ধান পেয়েছি। স্বাভাবিক চাষাবাদে প্রতি বছরেই ওই জমিতে ৪০ মণ ধান হয়ে থাকে।
সাদুল্যাপুরের কৃষক জলিল মিয়া বলেন, আমার কোনো নিজস্ব আবাদি জমি না থাকায় আমি ৬০ শতক জমি বর্গা নিয়ে ইরি-বোরো ধান চাষ করেছি। ৫০ মণ ধান ঘরে তোলার আশাবাদে বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে লোন নিয়ে ধান চাষাবাদ করি। এমতাবস্থায় ওই ক্ষেতে সাদা শীষ ও পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় বর্তমানে জমি থেকে ৫ মণ ধান অর্জন করাও সম্ভব হচ্ছে না। এখন গ্রহিত ঋন কিভাবে পরিশোধ করব এনিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি। বিশেষ করে বি-আর-২৮ জাতের ধান ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের জানান, এবারে প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে চলতি বছর বোরো ধানের রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন হতো।
সাদুল্যাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. ফজলু এলাহী বলেন, চলতি বোরো মওসুমে সাদুল্যাপুর উপজেলায় ১৪ হাজার ৬শ ৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ হয়েছিল। এবারে বৈরী আবহাওয়ার কারণেই লক্ষমাত্রা অর্জন সম্ভব নয় বলে তিনি জানান।