রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, রবীন্দ্রনাথের বিশালতা এবং তাঁর সৃষ্টির অপূর্ব মাধুর্যকে অন্তরাত্মা দিয়ে উপলব্ধি করতে হলে রবীন্দ্রচর্চার বিকল্প নেই।
রবীন্দ্রনাথকে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এক অপরিহার্য অবলম্বন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জীবনের আনন্দ-বেদনা, আশা-নিরাশা, সংকট-সাফল্যে, উৎসব-পার্বণে রবীন্দ্রনাথ বাঙালির পরম আশ্রয়। তিনি আমাদের আত্মার আত্মীয়। রবীন্দ্রনাথ মানবতাবাদী অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি। তাঁর শিল্পীসত্ত্বা ও মানবসত্ত্বা ঐক্য ও সম্প্রীতির আভায় সমুজ্জ্বল।
রাষ্ট্রপতি হামিদ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন। আগামীকাল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী। তিনি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবির অম্লান স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
আবদুল হামিদ জগৎ-সংসারকে গভীরভাবে জানতে তরুণ প্রজন্ম রবীন্দ্র সাহিত্যে অবগাহন করবে, রবীন্দ্র চর্চায় থাকবে ব্যাপৃত– এ প্রত্যাশা করেন। তিনি বলেন, যা কেবল আচার সর্বস্ব নয়, হবে জীবন সর্বস্ব। রবীন্দ্রচেতনার আলোকে সাম্য ও শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন আরো দৃঢ় হবে এ কামনাও করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যের একজন দিকপাল, উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর সাহিত্য সম্ভার যেমন বিশাল তেমনি বর্ণাঢ্য আপন মহিমায়। তাঁর কালজয়ী লেখায় একদিকে ঋদ্ধ হয়েছে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, অন্যদিকে তা বিশ্বসাহিত্যের অপরিহার্য উপাদানে পরিণত হয়েছে আপন বৈভব, আঙ্গিক, বহুমাত্রিকতা আর সার্বজনীনতায়।
‘ কবির মানসপটে ছিল শিল্পের পরিশীলিত আবহ, প্রকৃতি, প্রেম, আধ্যাত্মিকতা এবং তাতে সম্মিলন ঘটে বিশ্বসভ্যতা, দর্শন ও বিজ্ঞান। রবীন্দ্রনাথ পারিপার্শ্বিক সবকিছুকে আত্মস্থ করেছেন গভীর উপলব্ধিতে এবং এর সার্থক বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন তাঁর কালোত্তীর্ণ সাহিত্যকর্মে।’
তিনি বলেন রবীন্দ্রনাথ একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও সমাজ-সংস্কারক। রবীন্দ্রনাথ কেবল তাঁর কালের কবি নন, তিনি সর্বকালের। তিনি বাংলা সাহিত্যকে পূর্ণতা দিয়েছেন, দিয়েছেন বিশ্বসমাজে উচ্চ প্রতিষ্ঠা ও মর্যাদা। শিল্প-সাহিত্যে তাঁর বিপুল অবদান আমাদের সাংস্কৃতিক সত্ত্বার এক অপরিহার্য অংশ।
আবদুল হামিদ বলেন, কবির চিন্তাচেতনা, অন্তর্নিহিত ভাব ও দর্শন আমাদের জাতীয় ও ব্যক্তি জীবনে প্রাসঙ্গিক করে তুলতে পারলে সামগ্রিক উন্নয়ন ও কল্যাণ ত্বরান্বিত হবে। ‘বাঙালি মাত্রেই রাবীন্দ্রিক’- এ উপলব্ধির ধারণ-ই হোক আমাদের নিত্য চলার পাথেয়। সূত্রঃ বাসস