খবরবাড়ি ডেস্কঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর প্রত্যন্তপল্লীর গোলজার মিয়া তার উৎপাদিত নেপিয়ার ঘাস বিক্রয় করে পারিবারিক ভাবে এখন অনেকটা স্বাবলম্বি।এলাকার উৎসূক অনেকের নিকট গোলজার অনুকরনীয় হয়ে উঠেছেন।
উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের প্রত্যন্তপল্লী সুলতানপুর বাড়ইপাড়া গ্রামের মৃত ফারাজ উদ্দিনের ৩ ছেলে ও ৪ মেয়েসহ ৭ সন্তানের মধ্যে গোলজার রহমান সবার বড়।পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সামান্য জমি নিয়ে তার পথচলা। কয়েক বছর আগেও গোলজার তার কৃষি জমিতে বিভিন্ন শস্য উৎপাদন করে স্ত্রী ও ৫ মেয়েসহ সংসারের ভরন-পোষনের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করে আসছিলেন। সময়ের ব্যাবধানে কৃষিক্ষেত্রে আমুল পরিবর্তন আসে।পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় গোলজার তার নিজস্ব ৩ বিঘা ও পাশেরবাড়ীর অপর এক ব্যাক্তির নিকট অর্থের বিনিময় বছর চুক্তির ভিত্তিতে বিঘা প্রতি ১০ হাজার টাকা হিসেবে ২০ হাজার টাকা দিয়ে ২ বিঘা জমি বন্ধোক নেন। শুরু করেন ঘাস চাষ।গৃহীত ওই জমি থেকে উৎপাদন ব্যয় বাদ দিয়ে প্রতি বিঘায় প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে বছরে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা হিসেবে ২ বিঘায় ন্যুনতম নীট আয় কর থাকেন প্রায় ২ লাখ টাকা।
ঘাস চাষ ও বিক্রি করে পারিবারিক স্বচ্ছলতা-স্বাবলম্বির ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যেই তার বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।সংসারে আরো রয়েছে
৪ মেয়ে। তারা বাবা-মা’কে সংসারে সার্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি যে যার মত বিভিন্ন স্কুলে পড়া-লেখা করছে।মোট ৫ বিঘা জমিতে গত কয়েক বছর আগে থেকে শুরু করেন নেপিয়ার ঘাস চাষ। এরপর গোলজারকে আর পিছনে তাকাতে হয়নি।গোলজার রহমান প্রতিদিন সকাল ৮ টার দিকে প্রায় ৬ কি.মি. দূর বাড়ী থেকে রিক্সাভ্যান যোগে ঘাস বিক্রয় করতে উপজেলা সদরে আসেন। প্রতিদিন ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত ঘাস বিক্রি করে থাকেন।প্রথমের দিকে সে নিরলস শ্রম দিয়ে ভ্যানযোগে নেপিয়ার ঘাস নিয়ে শুধু পলাশবাড়ী নয়। সদর ছাড়াও এর পার্শ্ববর্তি এলাকায় দিনভর ঘুরে-ঘুরে ঘাস বিক্রি করে অবশেষে রাতে বাড়ী ফিরতেন।
পলাশবাড়ী ছাড়াও গোলজার সপ্তাহে অন্ততঃ ২দিন ঘাস নিয়ে গাইবান্ধা জেলা সদর, বালাসি ও গোবিন্দগন্জের বালুয়া ছাড়াও এ অঞ্চলের বিভিন্ন স্হানে ঘাস বিক্রি করে থাকেন।
রিক্সাভ্যানের চেয়ে বেশি পরিমাণ ঘাস বহনের মাধ্যমে বিক্রির সুবিধার্থে রিক্সাভ্যানের পরিবর্তন করে ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে সম্প্রতি একটি ঘোড়াসহ গাড়ী কিনেছেন।
বুধবার সকালে উপজেলা সদরে ঘাস বিক্রি করতে আসা গোলজারের সাথে কথা বললে সে জানায়, প্রতিদিন রিক্সাভ্যান পরিচর্যায় ৩০ টাকার মতহলেও ঘোড়ার পরিচর্যায় ব্যায় হয়ে থাকে প্রায় ১’শ টাকা। তবে একটি রিক্সাভ্যানের চেয়ে ঘোড় গাড়ীতে অনেক বেশি পরিমাণ ঘাস বহন করা যায়।এ জন্যই গোলজার ঘোড়ার গাড়ী কিনেছেন। রিক্সাভ্যানের পরিবর্তন করে যেদিন ঘোড়ারগাড়ী করেছি সেদিন থেকে প্রাত্যহিক আয় অনেকটা বেড়েছে।