এটিএম আফছার আলী, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ ভূয়া প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধর্মপুর ডিডিএম উচ্চ বিদ্যালয়। এনিয়ে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন ডাকুয়া লিখন দুর্নীতি দমন কমিশনে অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ওই বিদ্যালয়ের ৩ জনসহ মোট ৯ জন প্রার্থী আবেদন করে। তৎকালিন এডহক কমিটির সভাপতি আনিসুর রহমান গোপনে মোটা অংকের অর্থের বিনিময় আবেদনকারি প্রার্থীদের মধ্যে শরিফুল ইসলামের সঙ্গে আতাঁত করে নিয়োগ কমিটির ভূয়া স্বাক্ষরে তাকে নিয়োগ দেন। নিয়োগ কমিটির ডিজি প্রতিনিধি গাইবান্ধার সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহানা বানু, শিক্ষক প্রতিনিধি সাইদুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক-আনারুল ইসলাম প্রত্যয়ন পত্রে তা উল্লেখ করেন। এছাড়া, ২০১২ সালে ২ ফ্রেব্রুয়ারি জেলা শিক্ষা অফিসারের ভূয়া স্মারক নং (ডিজিটাল মেলা স্মারক নং ২১৭) ও স্বাক্ষর দিয়ে এমপিও ভূক্তির জন্য আবেদন করেন। বিদ্যালয়ের পরবর্তী ম্যানেজিং কমিটি ভূয়া প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব পালনে বাঁধা প্রদান করলে ভূয়া প্রধান শিক্ষক-শরিফুল ইসলাম হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন (রিট নং-৯৪৫৫/১১)। যা পরবর্তীতে মহামান্য হাইকোর্ট খারিজ করে। এরই একপর্যায় ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি ভাড়াটিয়া লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে ক্ষমতায় বসে প্রধান শিক্ষক- শরিফুল ইসলাম। এরপর একটি পকেট কমিটি গঠন করে বিদ্যালয়ে দায়িত্বপালন করতে থাকে। দায়িত্ব পালনকালে তিনি বিদ্যালয়ের টিউশন ফি বাবদ ৫ লাখ ১৩ হাজার ৯০ টাকা, বিদ্যালয়ের উন্নয়ন তহবিল হতে ১ লাখ ৩ হাজার টাকা, বিদ্যালয়ের জায়গায় স্থাপিত ৪৭টি দোকান ঘরের ভাড়া, পজেশন বিক্রির টাকা, ২টি পুকুরের বার্ষিক লিজের ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৬৩০ টাকাসহ মোট ১০ লাখ ৬২ হাজার ৭২০ টাকা আত্মসাত করেন। এছাড়া বিদ্যালয়ের ১ হাজার ৫০ জন শিক্ষার্থীর সেশন ফি, ভর্তি ফি, মাসিক বেতন, পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন ও ফরমপুরণের ফিসহ যাবতীয় উৎসহের লক্ষ-লক্ষ টাকা আর্থসাত করেন। বিদ্যালয়ের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন ডাকুয়া লিখন জানান-আমি কমিটির দায়িত্বভার গ্রহণের পর যাবর্তীয় হিসাব-নিকাশের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি দেখতে চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। তাছাড়া ভূয়া স্বাক্ষরে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি একাধিক বার তদন্তে প্রামাণিত হয়েছে। এ কারণে আমি দুর্নীতি দমন কমিশনসহ একাধিক দপ্তরে অভিযোগ করেছি। ভুয়া প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল-ফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।