খবরবাড়ি ডেস্ক: স্পিকার ও সিপিএ নির্বাহী চেয়ারপার্সন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে নির্ভীকভাবে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি আজ জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে চট্টগ্রাম বিভাগ সাংবাদিক ফোরাম ঢাকা (সিডিজেফডি) আয়োজিত বার্ষিক সাধারন সভা-২০১৭ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহবান জানান।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমৃত্যু জনগণের কল্যাণে নিবেদিত থেকে জনগণের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে গেছেন। দীর্ঘ ২৪ বছরের জেল জুলুম হুলিয়াকে উপেক্ষা করে বাঙালী জাতিকে স্বাধীনতার রক্তিম পতাকা উপহার দিয়েছিলেন। বিশ্বের মানচিত্রে সূচিত হয়েছিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের পর তাঁরই সুযোগ্য কন্যা অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে নিরলস নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন, যার লক্ষ্য ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণ।
তিনি বলেন, গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ। সংবাদপত্র, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও অনলাইন মিডিয়ার মাধ্যমে গণমাধ্যম সমাজের চিত্র প্রস্ফুটিত করে। শক্ত কলমের লেখনীর মাধ্যমে সাংবাদিক সমাজ যে দায়িত্ব পালন করেন তা অত্যন্ত গর্বের ও গৌরবের। মেধা ও দক্ষতা বিকশিত করে জনগণের কল্যাণে কাজ করে গেলে নানা বাঁধা বিপত্তি আসতে পারে। তিনি সকল প্রতিকূলতার উর্ধ্বে উঠে সুপ্ত প্রতিভার বিকাশে এগিয়ে যেতে সাংবাদিক সমাজের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।
‘সংবাদপত্রের মাধ্যমে জাতি ও সরকার নিজেরা নিজেদের মধ্যে কথা বলে’ উক্তিটি উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, ন্যায় ও অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সংগ্রামসহ জনগণের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরতে সাংবাদিক সমাজ ঝুঁকি নিয়ে কঠিন দায়িত্ববোধ ও দায়বদ্ধতা থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
শিরীন শারমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিক সমাজের অধিকারের বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। বর্তমান সরকার সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাষ্ট গঠণ করে দুস্থ ও অস্বচ্ছল সাংবাদিকদের সেবা প্রদান করে যাচ্ছে, যেখানে প্রতিবছর দুই থেকে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এছাড়াও সাংবাদিকদের জন্য নবম ওয়েজ বোর্ড গঠন ও বাস্তবায়নের প্রতিও রয়েছে তাঁর সজাগ দৃষ্টি।
‘ওগো মা অনেক তোমার খেয়েছি গো, অনেক নিয়েছি মা- তবু জানি নিজে কি’বা তোমায় দিয়েছি মা’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এ মহান বাণীটির উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালী জাতিকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে শিখিয়েছেন অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে পরিণত করেছেন উন্নয়নের রোল মডেলে। সে কারণে দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে স্পিকার সকলকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে আত্মনিয়োগ করার আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে ‘ভিশন ২০২১’ লক্ষ্য বাস্তবায়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন, যা বাংলাদেশকে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করবে। ইতোমধ্যেই দারিদ্র্যতার হার ৪০ ভাগ থেকে কমে ২২ ভাগে এসেছে, মাথাপিঁছু আয় ৫শ’ ইউএস ডলার থেকে বেড়ে ১ হাজার ৪৬৫ ডলারে উন্নীত হয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন তিন হাজার মেগাওয়াট থেকে বেড়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াট হয়েছে ও গ্যাস, সৌরচালিত বিদ্যুৎসহ জ্বালানি খাতে অভাবনীয় অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
তিনি বলেন, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রসূতি ভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তি ও বিদ্যালয়গামী কোমলমতি শিশুদের মাঝে বিনামূলে বই বিতরণের মাধ্যমে সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা হয়েছে, প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে দেয়া হচ্ছে বিশেষ সুবিধা।
স্পিকার বলেন, এছাড়া পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, বহিঃসমুদ্র বন্দরসহ বৃহৎ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে মেরিন ড্রাইভওয়ে উদ্বোধন করেছেন। এসকল উন্নয়নের মাধ্যমেই অর্জিত হবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা।
সিডিজেফডি’র আহবায়ক সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান খোকনের সভাপতিত্বে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিডিজেফডি’র সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শাহিনুল ইসলাম চৌধুরী। আরও বক্তৃতা করেন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, প্রেসক্লাব ব্যবস্থপনা কমিটির সহসভাপতি আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাবান মাহমুদ। সূত্রঃ বাসস