ক্রিকেটে ব্যাটসম্যান-বোলারদের পাশাপাশি অলরাউন্ডারদের ভূমিকাও অনেক বেশি। কখনো কখনো দেখা গেছে, কেবল বোলার কিংবা ব্যাটসম্যনরা ম্যাচ জিতিয়ে আনতে পারে না। অলরাউন্ডারদের নৈপুণ্যে অনেকাংশে ম্যাচ জয় সহজ হয়ে যায়। অতীত ইতিহাস তাই বলে। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে কপিল দেবের অলরাউন্ডিং পারফরমেন্সে খাদের কিনারা থেকে শিরোপা জয় করেছিলো ভারত। ঠিক তেমনি ১৯৯২ সালে ইমরান খানের ব্যাটি-বোলিং প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতে নেয় পাকিস্তান। আর বর্তমান যুগে ইতিহাস বলছে- ২০১১ সালে যুবরাজ সিং-এর অলরাউন্ডিং পারফরমেন্স দ্বিতীয়বারের মতো ভারতকে শিরোপা এনে দিয়েছে। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে স্পট লাইট থাকা পাঁচ অলরাউন্ডার।
সেরা পাঁচ অলরাউন্ডার :
১. সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ) : বর্তমান বিশ্বে ত্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই আইসিসি অলরাউন্ড র্যাংকিং-এর শীর্ষে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান। অষ্টম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করছে সাকিবের পারফরমেন্সের ওপর। সাকিবের সক্ষমতা নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে কোন সন্দেহ নেই। দলের প্রয়োজনে যেকোন সময়ে জ্বলে উঠতে সক্ষম বাঁ-হাতি এ ব্যাটসম্যান।
বাংলাদেশের হয়ে ১৭২ ওয়ানডেতে ব্যাট হাতে ৬টি সেঞ্চুরিতে ৪,৭৯৮ রান ও বল হাতে ২২২ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলসের কন্ডিশনে সাকিবের পাশাপাশি দলের অন্যান্য খেলোয়াদেরও পারফরমেন্সও খুব বেশ গুরুত্বপূর্ণ। যার ওপর বাংলাদেশের সাফল্য নির্ভর করছে।
২. বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড) : রেকর্ড সাড়ে চৌদ্দ কোটি রুপিতে আইপিএলের দশম আসরে রাইজিং পুনে সুপারজায়ান্টে যোগ দেন ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। বিদেশীদের মধ্যে রেকর্ড দামে কেনো তাকে পুনে কিনেছে, টুর্নামেন্ট চলাকালীন তা প্রমাণ করেছেন তিনি। ১১ ইনিংসে ১টি করে সেঞ্চুরি ও হাফ-সেঞ্চুরিতে ৩১৬ রান ও ১২ উইকেট নিয়েছেন স্টোকস। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের সাফল্যের ক্ষেত্রে তার অলরাউন্ড নৈপুণ্য বড় ভূমিকা পালন করবে। অলরাউন্ডার স্টোকস নৈপুণ্যের ওপর নির্ভর করছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইংল্যান্ডের সাফল্য।
৩. ক্রিস মরিস (দক্ষিণ আফ্রিক) : বর্তমানে ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রভাবশালী এক অলরাউন্ডার দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিস মরিস। লোয়ার-অর্ডারে ব্যাট হাতে বিধ্বংসী রূপ নিতে পরিপক্ব তিনি। আর বল হাতে যেকোন পরিস্থিতিতে ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দিতে পারেন মরিস। ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে তার ১৪০ কিলোমিটার গতির বল ভালো কাজে দিবে।
বিশেষভাবে ডেথ ওভারে মরিস ডেলিভারিগুলো অনেক বেশি কার্যকর। দক্ষিণ আফ্রিকার ‘চোকার্স’ শব্দটি আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মুছে ফেলতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেন মরিস।
৪. ক্রিস ওকস (ইংল্যান্ড) : ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে ক্রিস ওকস অলরাউন্ডিং পারফরমেন্স অনেক বেশি কার্যকর হবে বলে বিশ্বাস দলটির। স্টোকসের সাথে ওকস জ্বলে উঠলে এই বিভাগে চিন্তা থাকবে না ইংলিশদের। বল হাতে উইকেটের দু’পাশেই বল সুইং করাতে সক্ষম তিনি। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে সেটি প্রমানও করেছেন ওকস। ১৩ ইনিংসে ১৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
৫. কোরি এন্ডারসন (ইংল্যান্ড) : অলরাউন্ডার হিসেবে নিউজিল্যান্ড দলের ভরসার নাম কোরি এন্ডারসন। আইপিএলে নিজেকে মেলে ধরতে না পারলেও, এন্ডারসনের ওপর ভরসা রাখছে নিউজিল্যান্ড। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের দু’টি ম্যাচেও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। তারপরও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এন্ডারসনের পারফরমেন্সের পর নিউজিল্যান্ডের সাফল্য নির্ভর করছে।সূত্র- বাসস